ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ইবাদত কবুলের শর্ত

মুহাম্মদ আনাস বিল্লাহ
ইবাদত কবুলের শর্ত

সুব্বুহুন (পবিত্রতম), কুদ্দুসুন (অতি পবিত্র ও মহাপবিত্রকারী) এগুলো মহান রাব্বুল আলামিনের গুণবাচক নামগুলোর মধ্যে অন্যতম। মহান রাব্বুল আলামিন চান মানুষের পুতঃপবিত্র জীবনযাপন। তিনি বলেন, ‘হে নবী পরিবার! আল্লাহ তো শুধু চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদের সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে।’ (সুরা আহযাব : ৩৩)। তিনি আরও বলেন, ‘তিনি তোমাদের পবিত্র করতে চান।’ (সুরা মায়িদা : ৬)। পবিত্রতা সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেন, ‘পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ।’ (মুসলিম : ২২৩)। অন্য একটি বর্ণনায় রয়েছে, ‘পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ : ৩৮)।

পবিত্রতা দিয়ে ইসলামের শুরু

ইসলামের শুরু হয় পবিত্রতা দিয়ে। ইসলামে বিশ্বাসের মূল কথা হলো, কালিমায়ে তাইয়্যিবা। যার অর্থ- পবিত্র বাক্য বা পবিত্রকারী বাণী। এর স্বীকৃতির দ্বারা আত্মার পবিত্রতা লাভ হয়। আত্মার পবিত্রতার পাশাপাশি শারীরিক পবিত্রতাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরি। কেননা, ইসলামে ইবাদতের গ্রহণযোগ্যতার জন্য পবিত্রতা শর্তারোপ করেছে। নামাজ পড়া, কোরআনে কারিম স্পর্শ করা বা কাবা শরিফ তওয়াফ করা- এ ইবাদতগুলো সম্পাদনের জন্য পবিত্রতাকে পূর্বশর্ত হিসেবে ফরজ করা হয়েছে। পবিত্রতা অর্জনের দুটি প্রধান পন্থা হচ্ছে, অজু ও গোসল। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর পানি বর্ষণ করেন তা দ্বারা তোমাদের পবিত্র করার জন্য।’ (সুরা আনফাল : ১১)।

পবিত্রতার জন্য অজুর ফরজ

অজুর চারটি ফরজ সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মোমিনরা! যখন তোমরা সালাতের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে। আর তোমাদের মাথা মাসেহ করবে। পা গ্রন্থি পর্যন্ত ধৌত করবে। যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তবে বিশেষভাবে পবিত্র হবে। তোমরা যদি পীড়িত হও বা সফরে থাক বা তোমাদের কেউ শৌচস্থান থেকে আসে বা তোমরা স্ত্রীর সঙ্গে সংগত হও এবং পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে এবং তা দিয়ে তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ করবে। আল্লাহ তোমাদের কষ্ট দিতে চান না; বরং তিনি তোমাদের পবিত্র করতে চান ও তোমাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ পূর্ণ করতে চান; যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর।’ (সুরা মায়িদা : ৬)।

পবিত্রতা অর্জনের মর্যাদা ও গুরুত্ব

মন ও স্থানের পবিত্রতা সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমার সঙ্গে কোনো শরিক স্থির কোরো না এবং আমার ঘরকে পবিত্র রেখ।’ (সুরা হজ : ২৬)। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ভালোভাবে অজু করল, এরপর কালিমায়ে শাহাদত পড়ল, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজাই খোলা থাকবে। সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে প্রবেশ করবে।’ (মুসলিম : ২৩৪, সুনানে আবি দাউদ : ১৬৯, তিরমিজি : ৫৫)। পবিত্রতা অর্জনের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা, ইবাদত কবুল ও শুদ্ধতা নির্ভর করে পবিত্রতার ওপর। এ কারণেই প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর শারীরিক ও মানসিক পবিত্রতা অর্জন করা আবশ্যক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত