ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মুফতি মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ

সাবেক সহকারী মুফতি, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম খাদেমুল ইসলাম (গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসা), টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ
মুফতি মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ

প্রশ্ন : আল্লাহতায়ালা যে তাকদির (ভাগ্য) নির্দিষ্ট করে রেখেছেন, সে হিসেবে মানুষ দুনিয়াতে আসার পর আমল করে থাকে। অর্থাৎ ভালো কাজ করুক আর মন্দ কাজ করুক, সবই আল্লাহর হুকুমে হয়ে থাকে। সুতরাং মানুষ দুনিয়াতে এসে যেসব পাপকর্ম করছে, এর জন্য আখেরাতে শাস্তি হবে কেন?

উত্তর : তাকদির আল্লাহতায়ালার গোপন রহস্য। এ রহস্য সম্পর্কে কোনো ফেরেশতা বা নবীও অবগত নন। তাই এ বিষয়ে আমাদের চিন্তা-ফিকির করায় নিজের ঈমানের ক্ষতি হয়। সুতরাং এ বিষয়ে প্রশ্ন করা, আলোচনা করা, গবেষণা করা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষেধ। আমাদের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাতেই মগ্ন থাকা উচিত। আয়েশা (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি তাকদির বিষয়ে কথা বলে, কেয়ামতের ময়দানে এ কারণে সে জিজ্ঞাসিত হবে। আর যে এ বিষয়ে আলোচনা না করবে, তাকে জিজ্ঞেস করা হবে না।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৮৪)। আরেক হাদিসে এসেছে; আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, একবার রাসুল (সা.) আমাদের কাছে এলেন এ অবস্থায় যে, আমরা তাকদির বিষয়ে আলোচনা করছিলাম। তখন রাসুল (সা.) প্রচণ্ড রেগে গেলেন। রাগে চেহারা আনারের মতো রক্তিম বর্ণ হলো। তিনি বললেন, ‘তোমরা এসব করতে আদিষ্ট হয়েছ নাকি আমি এসবের জন্য আবির্ভূত হয়েছি? তোমাদের আগের উম্মতরা এ বিষয়ে আলোচনা করে ধ্বংস হয়েছে। দৃঢ়তার সঙ্গে বলছি, তোমরা এ বিষয়ে বিবাদে লিপ্ত হয়ো না।’ (তিরমিজি : ২১৩৩)। আল্লাহতায়ালা বান্দাকে কোনো কাজ করতে বাধ্য করেন না; বরং দুনিয়াতে তাকে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আল্লাহতায়ালা যেহেতু সব বিষয়ে জ্ঞাত, তাই তিনি আগে লিখে রেখেছেন- বান্দা কী করবে? এটাই তাকদির। আর আল্লাহর এ লিখে রাখা বান্দার কর্মের ওপর কোনো প্রভাব সৃষ্টি করে না। তাই বান্দা তার কর্ম অনুপাতে ফল পাবে। আরেকভাবে বলা যায়, দুনিয়াতে বান্দা ভালো-মন্দ উভয় কাজের জন্য স্বাধীন। এখানে আল্লাহতায়ালা কাউকে কোনো কাজ করতে সরাসরি বাধ্য করেন না। বাকি বান্দা কী করবে, তা আল্লাহতায়ালা আগ থেকেই জানেন। সে হিসেবে আগেই সবকিছু লিখে রাখা হয়েছে। আল্লাহতায়ালার এ লিখে রাখার দ্বারা বান্দার কাজে কোনো প্রভাব সৃষ্টি করে না। তাই বান্দা তার কর্ম অনুপাতে বদলা পাবে। আর বান্দা যেহেতু জানে না, আল্লাহতায়ালা কী লিখে রেখেছেন! সুতরাং বান্দার উচিত, ভালো কর্ম করতে সর্বদা সচেষ্ট থাকা এবং মন্দ কর্ম থেকে নিজেকে বিরত রাখা। তাই তাকদির বিষয়ে কথা বলা অনুচিত।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত