প্রশ্ন : ভুলে নামাজে সেজদার আয়াত তেলাওয়াত করে সেজদা না দিয়ে নামাজ শেষ করে ফেললে নামাজ হবে? ওই সেজদা পরে কীভাবে আদায় করতে হবে?
উত্তর : নামাজ সহিহ হবে। তবে সেজদায়ে তেলাওয়াত না করার কারণে অনুত্তম হবে। ওই সেজদা যেহেতু নামাজে আদায় করা হয়নি, তাই তা আর আদায় করতে হবে না। কেননা, নামাজের সেজদায়ে তেলাওয়াত নামাজের বাইরে আদায় করার বিধান নেই। উল্লেখ্য, কেউ যদি নামাজে ভুলে সেজদায়ে তেলাওয়াত না করে সালাম ফেরায়, অতঃপর নামাজ পরিপন্থি কোনো কাজ করার আগে তা স্মরণ হয়, তাহলে তৎক্ষণাৎ তা আদায় করে সাহু সেজদা দিয়ে নামাজ শেষ করবে। (কিতাবুল আসল : ১/২৭৬, আল মুহিতুল বোরহানি : ২/৩৩৩, বাদায়েউস সানায়ে : ১/৪১০, আল বাহরুর রায়েক : ২/১২৪, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/৩৬১)।
প্রশ্ন : সফর অবস্থায় সুন্নত নামাজের হুকুম কী?
উত্তর : সফরে চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজই শুধু কসর করতে হয়। সুন্নত বা অন্য কোনো নামাজে কসরের বিধান নেই। তবে সুন্নতে মোয়াক্কাদা নামাজ সফর অবস্থায় মোয়াক্কাদা থাকে না। তা ছাড়া তাড়াহুড়া ও অধিক ক্লান্তির সময় সুন্নত না পড়ারও সুযোগ আছে। বিশেষত সুন্নত আদায়ের কারণে গাড়ি ফেল করা বা অন্য কোনো সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা থাকলে অথবা অপেক্ষায় থাকা কোনো ব্যক্তি বা সফরসঙ্গীর কষ্ট হলে সুন্নত ছেড়ে দেয়াই কর্তব্য। অবশ্য সফরে ঝামেলামুক্ত ও সুস্থ থাকলে সুন্নত পড়ে নেয়া উত্তম। (আল মাবসুত লিস সারাখসি : ১/২৪৮, শরহুল মুনয়া : ৫৪৫, হালবাতুল মুজাল্লি : ১/৫২৩, রদ্দুল মুহতার : ২/১৩১, ফতোয়ায়ে রহিমিয়্যা : ৫/১৭৩)।
প্রশ্ন : ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে যদি কেরাত পড়তে ভুলে যায়, তবে তৃতীয় বা চতুর্থ রাকাতে মনে পড়লে সুরা ফাতিহার পর সুরা পড়ে নেয়া কি জরুরি?
উত্তর : ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে সুরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য সুরা মেলাতে ভুলে গেলে নিয়ম হলো, তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে সুরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য সুরা পড়ে নেয়া। আর দুই রাকাতের কোনো এক রাকাতে সুরা মেলাতে ভুলে গেলে পরের দুই রাকাতের যে কোনো এক রাকাতে সুরা মিলিয়ে নেবে। অবশ্য এ ক্ষেত্রে পরের দুই রাকাতে যদি সুরা মেলানো না হয়, তবুও নামাজ আদায় হয়ে যাবে এবং সুরা মেলানো হোক বা না হোক উভয় ক্ষেত্রে নামাজ শেষে সাহু সেজদা দিতে হবে। আর উচ্চ স্বরে কেরাতবিশিষ্ট নামাজের কোনো রাকাতে ইমাম সুরা মেলাতে ভুলে গেলে শেষ দুই রাকাতের যে রাকাতে সুরা মেলাবে, ওই রাকাতের কেরাত (সুরা) জোরে পড়বে। (কিতাবুল আসল : ১/১৯৫, আল জামিউস সগির : ৭২ ও ৯৬, ফাতহুল কাদির : ১/২৮৭, তাবয়িনুল হাকায়েক : ১/৩২৯, আদ্দুররুল মুখতার : ১/৫৫৯)।