ঢাকা ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

হাজীর অনন্য মর্যাদা

উবাইদুল্লাহ তারানগরী
হাজীর অনন্য মর্যাদা

আল্লাহতায়ালা বান্দাকে ভালোবেসে পাপরাশি ক্ষমা করে জান্নাত দানের জন্য কিছু বিধান রেখেছেন। যার কিছু শারীরিক (যেমন- নামাজ, রোজা), কিছু মালকেন্দ্রিক (যেমন- জাকাত, দান-সদকা); আর কিছু উভয়টির সমন্বয়। তা হচ্ছে হজ, দিদারে বাইতুল্লাহ ও জেয়ারতে মদিনা। আল্লাহতায়ালা দয়া করে বান্দাকে আপন ঘর ও প্রিয় বন্ধুর শহরে নিয়ে যান নিষ্পাপ জান্নাতি মানুষরূপে গড়ার জন্য। এ গুণ অর্জনে আল্লাহর কত শত বান্দা জায়নামাজে কেঁদেছেন, কাঁদছেন, কাঁদবেন; এর হিসাব নেই। অনেকের মিনতি এমনও, হে আল্লাহ! কাফনের কাপড় লাগার আগে আগে হলেও ইহরামের কাপড় পরিয়ো। প্রখ্যাত আলেম দ্বীন আবু মুসলিম খাওলানি (রহ.) মোনাজাতে বলতেন, ‘মদিনা মে মুঝকো বুলাতে নেহি কিঁউ, খোদা জানে মুঝ সে খাতা কিয়া হুয়ি।’

প্রকৃত হাজী নিষ্পাপ শিশু

হজ পালন বান্দাকে নিষ্পাপ ও বে-গোনাহ বানায়। কত ভাগ্যবান তারা! আল্লাহর ঘরের মেহমানও হলো, পবিত্র নির্মল জীবনের অধিকারী হয়ে পুরস্কারও অর্জন করল। আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত; তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর (সন্তুষ্টি অর্জনের) জন্য হজ করবে, এরপর যৌন অপরাধ থেকে বিরত থাকবে, গোনাহে লিপ্ত হবে না, সে এমন দিনের মতো (নিষ্পাপ) ফিরে আসবে, যেদিন তার মা তাকে জন্ম দিয়েছিল।’ (বোখারি : ১৫২১, ১৮২০; মুসলিম : ১৩৫০)। রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘তোমরা হজ-ওমরাহর মধ্যে অনুগামী বানাও।

কেননা, এ দুটি দারিদ্র্য ও গোনাহগুলো এমনভাবে বিমোচন করে, যেমন (কামারের) হাপর লোহা, সোনা ও রুপার মরিচা দূর করে। আর হজ্জে মাবরুরের বিনিময় জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।’ (তিরমিজি : ৮১০, সুনানে নাসায়ি : ২৬৩০-২৬৩১)।

হজের বিনিময় জান্নাত

অভাব দূরকারী, দারিদ্র্য বিমোচনকারী হজের বিনিময় শুধুই জান্নাত। প্রয়োজন শুধু সাধনার মাধ্যমে হজটিকে কবুল করিয়ে নেয়া এবং হজ্জে মাবরুর অর্জন করা। আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত; রাসুল (সা.) বলেন, ‘এক ওমরাহ থেকে অপর ওমরাহ পর্যন্ত উভয়ের মধ্যবর্তী যাবতীয় কার্যকলাপের কাফফারা (মার্জনা) হয়ে যায়। আর হজ্জে মাবরুরের বিনিময় শুধুই জান্নাত।’ (বোখারি : ১৭৭৩, মুসলিম : ১৩৪৯)।

হজ জীবনের শ্রেষ্ঠ জিহাদ

আয়েশা (রা.) সূত্রে বর্ণিত; তিনি বলেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা জিহাদকে সর্বোত্তম আমল মনে করি, তাহলে আমরা কি (সর্বোত্তম আমল) জিহাদ করব না?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘না। তবে তোমাদের জন্য শ্রেষ্ঠ জিহাদ হচ্ছে কবুল হজ।’ (বোখারি : ১৫২০)। হজ-ওমরা ছোট-বড়, দুর্বল-সবল নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্য জিহাদ। আবু হুরায়রা (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘বয়স্ক, কমবয়স্ক, দুর্বল ও নারীর জিহাদ হলো হজ-ওমরাহ।’ (সুনানে নাসায়ি : ২৬২৬)।

তালবিয়ার সঙ্গে রহমত বর্ষণ

হাজীদের তালবিয়া পাঠের সঙ্গে সঙ্গে ইট-পাথর, গাছগাছালি এবং বালুকণা পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করে। সাহল ইবনে সাদ (রা.) সূত্রে বর্ণিত; রাসুল (সা.) বলেন, ‘এমন কোনো মুসলমান নেই, যে তালবিয়া পড়ে আর তার সঙ্গে তার ডানে-বামে এদিক-ওদিক থেকে পৃথিবীর শেষ সীমানা পর্যন্ত যে পাথর, গাছপালা এবং ইট-পাথর থাকে, সেগুলোও তালবিয়া পাঠ করে না।’ (তিরমিজি : ৮২৮, সুনানে ইবনে মাজাহ : ২৯২১)।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত