ঢাকা ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

হাফেজ মাওলানা মুফতি আলী হায়দার

খতিব, তরিকিয়া জামে মসজিদ, সংসদ অ্যাভিনিউ, ঢাকা
হাফেজ মাওলানা মুফতি আলী হায়দার

প্রশ্ন : খাসিকৃত পশু দিয়ে কোরবানি করা যাবে?

উত্তর : খাসিকৃত পশু দিয়ে কোরবানি করা উত্তম। রাসুল (সা.) যখন কোরবানি করার ইচ্ছে করতেন, তখন দুটি বড় মোটা-তাজা শিং ও সুন্দর রংবিশিষ্ট মেষ কিনতেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩১১৩)। আবু রাফে (রহ.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুল (সা.) দুটি মোটা-তাজা খাসিকৃত ভেড়ার কোরবানি করেছেন।’ (মুসনাদে আহমদ : ২৬৬৪৯)।

প্রশ্ন : গর্ভবতী পশু কোরবানি করা যাবে?

উত্তর : গর্ভবতী পশু কোরবানি করা জায়েজ। তবে প্রসবের সময় আসন্ন হলে সে পশু কোরবানি করা মাকরুহ। জবাইয়ের পর যদি বাচ্চা জীবিত পাওয়া যায়, তাহলে সেটাও জবাই করতে হবে এবং কেউ চাইলে এর গোশতও খেতে পারবে। (ফতোয়ায়ে কাজিখান : ৩/৩৫০)।

প্রশ্ন : জবাইয়ের আগে বাচ্চা প্রসব করলে তার বিধান কী?

উত্তর : কোরবানির পশু ক্রয় করার পর জবাইয়ের আগে বাচ্চা প্রসব করলে ওই বাচ্চার গোশত খাওয়া যাবে না। পুরো গোশত সদকা করে দিতে হবে। তবে ওই বাচ্চা জবাই না করে জীবিত সদকা করে দেয়া উত্তম। (ফতোয়ায়ে কাজিখান : ৩/৩৪৯, ফতোয়ায়ে আলমগিরি : ৫/৩০১)।

প্রশ্ন : বন্ধ্যা ও পাগল পশু দিয়ে কোরবানি হবে?

উত্তর : বন্ধ্যা পশুর কোরবানি জায়েজ। (রদ্দুল মুহতার : ৬/৩২৫)। হাসান (রা.) বলেন, ‘পাগল পশুর কোরবানি জায়েজ। তবে যদি এমন পাগল হয়, যে ঘাস-পানি দিলে খায় না এবং মাঠেও চরে না, তাহলে তার কোরবানি জায়েজ হবে না। (আন নিহায়া ফি গরিবিল হাদিস : ১/২৩০, বাদায়েউস সানায়ে : ৪/২১৬)।

প্রশ্ন : জিহ্বাহীন পশুর কোরবানির বিধান কী?

উত্তর : জিহ্বা নেই, এমন গরু দ্বারা কোরবানি করলে সহিহ হবে না। তবে জিহ্বাহীন ছাগল দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ। তবে না করা ভালো। (ফতোয়ায়ে শামি : ৫/২২৯, ফতোয়ায়ে আলমগিরি : ৫/২৯৮)।

প্রশ্ন : জন্মগত শিং নেই বা ভাঙা- এমন পশুর বিধান কী

উত্তর : যে পশুর জন্মগত শিং নেই বা মাঝখানে ভেঙে গেছে, তা দিয়েও কোরবানি জায়েজ। আলী (রা.) সূত্রে বর্ণিত; তিনি বলেন, ‘একটি গাভি সাতজনের পক্ষ থেকে কোরবানি করা যায়।’ (বর্ণনাকারী বলেন) বললাম, ‘যদি গাভি বাচ্চা দেয়, তাহলে কী করব?’ বললেন, ‘বাচ্চাকেও গাভির সঙ্গে জবাই করে দাও।’ বললাম, ‘খোঁড়া পশু!’ বললেন, ‘যদি কোরবানির স্থানে হেঁটে যেতে পারে, তাহলে কোরবানি করবে।’ বললাম, ‘শিংভাঙা পশু!’ বললেন, ‘এমন পশু দিয়ে কোরবানি করতে কোনো সমস্যা নেই। তবে আমাদেরকে রাসুল (সা.) কোরবানির পশুর চোখণ্ডকান ভালোভাবে দেখে নেয়ার আদেশ করেছেন।’ (তিরমিজি : ১৪২৩)।

প্রশ্ন : নাপাক খেয়ে জীবিকা নির্বাহকারী পশু কোরবানি করা যাবে?

উত্তর : যে পশু শুধু নাপাক খেয়েই জীবিকা নির্বাহ করে, তা দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ নেই। তবে সে পশুটি উট হলে ৪০ দিন, গরু-মহিষ হলে ২০ দিন, ছাগল-ভেড়া-দুম্বা হলে ১০ দিন বেঁধে রাখার পর কোরবানি করলে বৈধ হবে। আর যে পশু মাঝেমধ্যে নাপাক খায়, তা দ্বারা কোরবানি করতে কোনো নিষেধ নেই। (ফতোয়ায়ে শামি : ৫/২২৯, ফতোয়ায়ে আলমগিরি : ৫/২৯৮)।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত