ঢাকা ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পর্দা অপরিহার্য বিধান

মাওলানা নূর হোসাইন
পর্দা অপরিহার্য বিধান

ইসলাম শান্তি ও মুক্তির ধর্ম। যথাযথভাবে ইসলামের বিধিবিধান ও নিয়ম মেনে চললে কোনো অন্যায় কাজ করা সম্ভব নয়। আইয়ামে জাহেলিয়াতে নারীরা ছিল ভোগের পণ্য। তাদের ছিল না কোনো মান-সম্মান। সর্বত্র তারা ছিল লাঞ্ছিত, বঞ্চিত, অবহেলিত ও অপদস্থ। সে সময় মহান রাব্বুল আলামিন পাঠালেন মানবতার মুক্তির দূত মুহাম্মদ (সা.)-কে। তার স্নিগ্ধ পরশে মানুষের সব ধরনের অমানবিকতা ও অন্যায় কর্মকাণ্ড দূরীভূত হয়ে যায়। নারীরা তাদের অধিকার ও ইজ্জত-সম্মান ফিরে পায়। আধুনিক যুগের নারীদের কাছে পর্দা মানে অবরোধ। প্রকৃতপক্ষে পর্দাই নারীর রক্ষাকবচ। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ অন্যান্য প্রাণী অপেক্ষা মানুষের বেশি। নিয়ন্ত্রণের অভাবে যা অনেক সময় নির্দিষ্ট সীমারেখার বাইরেও চলে যেতে পারে। এ আকর্ষণের অপব্যবহার নৈতিকতাকে ধ্বংস করে সামাজিক অবক্ষয় ও বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে। তাই নারী-পুরুষের অবস্থান ও চলাচলের গণ্ডি নির্দিষ্ট করে দিয়েছে ইসলাম।

পর্দা পাশবিক উচ্ছৃঙ্খলতা মুক্ত

পর্দাব্যবস্থা মহান আল্লাহর এমন এক শ্বাশত বিধান, যা পুরুষের পাশবিক উচ্ছৃঙ্খলতা থেকে হেফাজত করে মনবিক মর্যাদার উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত করে। নারীকে পুরুষের হিংস্র নির্যাতন থেকে বাঁচায়। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে নারীজাতির আব্রু-ইজ্জত রক্ষায় নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা তোমাদের ঘরে অবস্থান করবে এবং মূর্খতার যুগের মতো নিজেদের প্রদর্শন করবে না।’ (সুরা আহজাব : ৩৩)। হাদিসেও পর্দার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে; রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নারী পর্দাবৃত থাকার বস্তু। যখন সে পর্দাহীন হয়ে বেরোয়, তখন শয়তান তার দিকে চোখ তুলে তাকায়।’ (তিরমিজি : ১১৭৩)।

পর্দা নারীর সম্মান রক্ষা করে

পর্দা দ্বীনের অপরিহার্য বিধান। নারীজাতিকে রক্ষা করার আল্লাহর দেয়া এক বড় নেয়ামত। এটি যথাযথভবে পালন করলে দুনিয়াতেও শান্তি, আখেরাতেও শান্তি। কিন্তু দুঃখ ও আফসোস, নব্বইভাগ মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে প্রায়ই দেখা যায়, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা দাড়ি, টুপি, বোরকা, হিজাব নিয়ে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হন। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ঘটনাটি নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে বেশ। এটি স্পষ্টতই সংবিধান স্বীকৃত ধর্মীয় অধিকারে বেআইনি হস্তক্ষেপের শামিল। কোনোভাবেই এ ধরনের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়।

লেখক : শিক্ষক, আলহাজ আবদুল মালেক মাতবর ইসলামিয়া মাদ্রাসা, খিলক্ষেত, ঢাকা

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত