নম্রতা মোমিনের শোভা
মুহাম্মদ আবু সালেহ
প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
বিনয় ও আত্মবিলাপ আল্লাহর দেওয়া বান্দার প্রতি অন্যতম চারিত্রিক গুণ। এটা মানবজাতির প্রতি ইসলামের নির্দেশও বটে। আচরণে, উচ্চারণে নিজেকে অন্য যে কারো তুলনায় ছোট মনে করা বিনয়। যা আল্লাহর কাছে অতি পছন্দনীয়। এটা প্রকাশ পেতে পারে মানুষের ওঠাবসা, চলাফেরা, কথাবার্তা- সব ক্ষেত্রেই। আল্লাহতায়ালা তাঁর প্রিয় বান্দা রাসুল (সা.)-কে বিনয়ী হওয়ার প্রতি আহ্বান করে আয়াত নাজিল করেছেন। যা এ গুণটির গুরুত্ব ও আবশ্যক হওয়ার প্রমাণ বহন করে। নবীজি (সা.) বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা আমার কাছে অহি পাঠালেন, তোমরা পরস্পর বিনয়ী হও। যাতে কেউ কারো ওপর সীমালঙ্ঘন না করে এবং কেউ কারো ওপর গর্ব না করে।’ (মুসলিম : ২৪১)।
বড়ত্ব জাহির করা নবীজির আদর্শ নয় : মানুষ যত বড়ই হোক না কেন, কোনো অবস্থাতেই কারো সঙ্গে দম্ভের আচরণ করা যাবে না। বরং বিনয় ও আত্মবিলাপের আচরণ করবে। যেন কেউ কারো সামনে নিজের বড়ত্ব ও সম্মান জাহির না করে। কারণ, দুনিয়াতে রাসুল (সা.)-এর থেকে কেউ সম্মানী ছিলেন না। সামনেও আসবে না। তাকেই যখন বিনয়ী হতে বলা হয়েছে, তখন অন্যদের কথা তো বলাইবাহুল্য। আল্লাহতায়ালা রাসুল (সা.)-কে সম্বোধন করে বলেন, ‘মোমিনদের জন্য আপনিআপনার বাৎসল্যের ডানা বিছিয়ে দিন।’ (সুরা হিজর : ১৫)। অন্য আয়াতে এসেছে, ‘আপনি আপনার অনুসারী মোমিনদের জন্য মমতার ডানা ন্যুয়ে দিন।’ (সুরা শুআরা : ২৬)।
বিনয় মোমিনের অন্যতম গুণ : যদি কাফের-মুশরিক কখনও মুসলমানদের বিরুদ্ধাচরণ ও দুর্ব্যবহার করে, তাহলে তাদের সঙ্গে বিনয় কখনও শোভা পায় না। কারণ, তা হবে ঈমানি মর্যাদাবোধের পরিপন্থি। যা মুসলমানদের জন্য সম্পূর্ণ হারাম।
এ জন্য কোরআন শরিফে শুধু মোমিনের সঙ্গে বিনয়ী হওয়ার প্রতি উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। আল্লাহতায়ালা বিনয়ী হওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করে বলেন, ‘দয়াময় আল্লাহর খাঁটি বান্দা তারা, যারা নিরাহংকার পথ চলে।’ (সুরা ফোরকান : ২৫)। এমনিভাবে অহংকার এর বিপরীত দম্ভকে পরিহারের ব্যাপারে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘ভূপৃষ্ঠে দম্ভভরে চলো না। তুমি তো পদাঘাতে জমিন চিড়ে ফেলতে পারবে না। আর উচ্চতায় পাহাড়কেউ অতিক্রম করতে পারবে না।’ (সুরা বনি ইসরাইল : ১৭)।