সবরে মেওয়া ফলে
আল আমিন
প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ধৈর্য হলো সাফল্যের চাবিকাঠি। কোনো সাফল্য বা কোনো লক্ষ্য-উদ্দেশ্য অর্জন করতে ধৈর্যকে সম্বল বানাতে হবে। আল্লাহতায়ালা আদি যুগ থেকে অনেক নবী-রাসুল দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। প্রত্যেকের মিশন ছিল দাওয়াহ।
এ দাওয়ার কাজ করতে গিয়ে অনেক কষ্ট-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তারা। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে এসেছে, ‘তোমরা আমাদের যে কষ্ট দিচ্ছ, আমরা তাতে অবশ্যই ধৈর্য ধারণ করব। আল্লাহর ওপর নির্ভরকারীরা নির্ভর করুক।’ (সুরা ইবরাহিম : ১২)।
দাওয়ার কাজে শুনতে হয় অপবাদ : নবী-রাসুলরা যখন দাওয়াতি কাজ করতে যেতেন, লোকেরা তাদের উন্মাদ ও জাদুকর বলত। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘এভাবে তাদের পূর্ববর্তীদের কাছে যখনই কোনো রাসুল এসেছে, তারা তাকে জাদুকর বা উন্মাদ বলেছে।’ (সুরা জারিয়াত : ৫২)। আমরা যদি নুহ (আ.)-এর জীবনের দিকে লক্ষ্য করি, তাহলে দেখতে পাব, তিনি নৌকা তৈরি করার সময় তার গোত্রের লোকেরা তার পাশ দিয়ে অতিক্রমকালে উপহাস করত।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘সে নৌকা নির্মাণ করতে লাগল। যখনই তার সম্প্রদায়ের প্রধানরা তার পাশ কেটে যেত, তাকে উপহাস করত। সে বলত, তোমরা যদি আমাকে উপহাস কর, তবে আমরাও তোমাদের উপহাস করব, যেমন তোমরা উপহাস করছ।’ (সুরা হুদ : ৩৮)।
দাওয়ার কাজে হত্যার হুমকি : নুহ (আ.)-এর সম্প্রদায়ের লোকেরা শুধু উপহাস করে ক্ষ্যান্ত হয়নি, বরং তারা তাকে হত্যার হুমকিও দিয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তারা বলল, হে নুহ! তুমি যদি বিরত না হও, তবে তুমি অবশ্যই প্রস্তরাঘাতে নিহত হবে।’ (সুরা শুআরা : ১১৬) )।
একইভাবে মুসা (আ.)-কে ফেরাউন হত্যার হুমকি দিয়েছিল। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘ফেরাউন বলল, আমাকে ছেড়ে দাও, আমি মুসাকে হত্যা করি। সে তার প্রতিপালকের শরণাপন্ন হোক। আমি আশঙ্কা করি, সে তোমাদের দ্বীনের পরিবর্তন ঘটাইবে অথবা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে।’ (সুরা মুমিন : ২৬)।
দাওয়ার কাজে শুনতে হয় গালি : প্রিয়নবী (সা.)-কে লোকেরা পাগল ও কবি বলেছিল। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তারা বলে, ওহে যার প্রতি কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে! তুমি তো একজন উন্মাদ।’ (সুরা হিজর : ৬)। অন্য আয়াতে এসেছে, ‘তারা বলত, আমরা কি এক উন্মাদ কবির কথায় আমাদের ইলাহদের বর্জন করব?’ (সুরা সাফফাত : ৩৬)। আল্লাহতায়ালা তাঁর প্রিয় হাবিবকে সান্ত¦না দিয়ে বলেন, ‘লোকে যা বলে, তাতে তুমি ধৈর্য ধারণ কর। সৌজন্য বোধ রক্ষা করে তাদের পরিহার করে চল।’ (সুরা মুজ্জাম্মিল : ১০)।