মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ
সাবেক সহকারী মুফতি, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম খাদেমুল ইসলাম (গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসা), টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
প্রশ্ন : নামাজে আস্তে আস্তে কিরাত পড়ার সর্বনিম্ন স্তর কতটুকু?
উত্তর : নামাজে নিম্নস্বরে তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে এমনভাবে পড়তে হবে, যেন হরফগুলো ভালোভাবে উচ্চারিত হয়। এতেই নামাজ সহিহ হয়ে যাবে। কানে শোনা আবশ্যক নয়। (কিতাবুল আসল : ১/৬, বাদায়েউস সানায়ে : ১/৩৯৭, আল বাহরুর রায়েক : ১/৩৩৬, ইলাউস সুনান : ৪/১৩)।
প্রশ্ন : নামাজে একই রাকাতে কোরআনের বিভিন্ন জায়গা থেকে তেলাওয়াত করার হুকুম কী? এভাবে তেলাওয়াত করলে নামাজ মাকরুহ হবে কিনা?
উত্তর : নামাজে একই রাকাতে ইচ্ছাকৃত একাধিক স্থান থেকে তেলাওয়াত করা মাকরুহ। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বেলাল (রা.)-এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। আর বেলাল (রা.) একই রাকাতে বিভিন্ন সুরা থেকে তেলাওয়াত করছিলেন।
পরে রাসুল (সা.) তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, ‘আমি একটি উত্তমকে আরেকটি উত্তমের সঙ্গে মিলিয়েছি।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘না, সুরা যেভাবে আছে, সেভাবেই পড়।’ (ফাযায়েলুল কোরআন : ৯৫)। এ জাতীয় হাদিসের আলোকে ফকিহগণ একই রাকাতে ইচ্ছাকৃত একাধিক স্থান থেকে পড়াকে মাকরুহ বলেছেন। তবে খতম তারাবির ক্ষেত্রে যেসব আয়াত ছুটে গেছে, সেগুলো একত্র করে একবারে পড়ে নিলে মাকরুহ হবে না। খতমের স্বার্থে একে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
(ফতোয়ায়ে তাতারখানিয়া : ২/৬৭, ফাতহুল কাদির : ১/২৯৯, শরহুল মুনয়া : ৪৯৪, রদ্দুল মুহতার : ১/৫৪৬, ইলাউস সুনান : ৪/১৩৯)।
প্রশ্ন : কারও যদি ইশার ফরজ বাতিল হয়ে যায়, তবে পুনরায় ফরজ আদায় করার সঙ্গে সঙ্গে সুন্নত ও বিতর পুনরায় আদায় করতে হবে?
উত্তর : ইশার ফরজ বাতিল হলে ইশার ফরজ পুনরায় আদায় করবে। তবে বিতর আর পড়তে হবে না।
কেননা, বিতর স্বতন্ত্র ওয়াজিব। ইশার ফরজ বাতিল হওয়ার দ্বারা বিতর বাতিল সাব্যস্ত হবে না। তবে ওয়াক্তের মধ্যেই যদি ফরজ আদায় করা হয়, তাহলে সুন্নত পুনরায় পড়ে নেবে। কেননা, সুন্নত ফরজেরই অনুগামী। তাই ফরজ বাতিল হলে সুন্নতও বাতিল হয়ে যায়। আর ওয়াক্ত শেষ হওয়ার পর স্মরণ হলে শুধু ফরজের কাজা করবে, সুন্নতের নয়। কেননা, সুন্নতের কাজা হয় না। (ফতোয়ায়ে সিরাজিয়্যা : ১৯, ফতোয়ায়ে তাতারখানিয়া : ২/৪৫০, মাজমাউল আনহুর : ১/২১৬)।