কুদৃষ্টি ধ্বংসাত্মক ব্যাধি
মুফতি মুহাম্মদ তাকি উসমানি
প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘মোমিন পুরুষদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এটাই তাদের জন্য শুদ্ধতর। তারা যা কিছু করে, আল্লাহ সে সম্পর্কে পরিপূর্ণ অবগত।’ (সুরা নুর : ৩০)। এ আয়াতে আল্লাহতায়ালা আমাদের কুদৃষ্টি ব্যাধির বর্ণনা দিয়েছেন। কুদৃষ্টি এমন এক ব্যাধি, যাতে অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত। শিক্ষিত ও লেখাপড়া জানা মানুষ, আলেম-ওলামা, আল্লাহঅলাদের সংস্পর্শে আসা মানুষ, ধার্মিক ও নামাজ-রোজার পাবন্দ ব্যক্তিরাও এ রোগে আক্রান্ত। আজকাল তো ঘর থেকে বাইরে বেরুলে নিজের দৃষ্টি বাঁচানো কঠিন। চতুর্দিকে এমন সব দৃশ্য, যা থেকে চোখের হেফাজত মুশকিল।
কুদৃষ্টির স্বরূপ : কুদৃষ্টি হলো, কোনো পরনারীর প্রতি দৃষ্টিপাত করা, বিশেষ করে কামনার সঙ্গে স্বাদ উপভোগের জন্য দৃষ্টিপাত করা। সেই পরনারী প্রকৃত হোক বা তার ছবি হোক। ছবির ওপরও দৃষ্টিপাত করা হারাম। এটাও কুদৃষ্টির অন্তর্ভুক্ত। এ কুদৃষ্টি মানুষের আত্মশুদ্ধির পথে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক। কুদৃষ্টি মানুষের আত্মাকে এমনভাবে ধ্বংস করে, তা অন্য সব গোনাহ থেকে মারাত্মক। মানুষের আত্মাকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে এর অনেক বেশি দখল রয়েছে। এর সংশোধন না হওয়া এবং দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধির চিন্তা করাও প্রায় অসম্ভব। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দৃষ্টি ইবলিসের তীরসমূহের মধ্য থেকে একটি বিষমিশ্রিত তীর। এ তীর ইবলিসের ধনুক থেকে বের হয়।’ (মাজমাউয যাওয়াইদ : ৮/৬৩, কানযুল উম্মাল : ৫/৪৮১, উদদাতুস সাবিরীন ওয়া যাখীরাতুশ শাকিরিন : ১/১৮)। কেউ যদি নির্দ্বিধায় তা মেনে নেয় এবং তার সামনে অস্ত্র সমর্পণ করে, তার অর্থ হলো, তার আত্মশুদ্ধির পথে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলো। কারণ, মানুষের আত্মাকে বিনষ্ট করার ক্ষেত্রে এ কুদৃষ্টির যেই পরিমাণ দখল রয়েছে, সম্ভবত অন্য কোনো গোনাহের এ পরিমাণ দখল নেই।
তিতার ঢোক পান করতে হবে : আমি আমার শায়খ হজরত ডা. আবদুল হাই সাহেব (রহ.)-এর কাছে শুনেছি; তিনি বলতেন, দৃষ্টির অপব্যবহার মানুষের আত্মার জন্য জীবননাশক বিষতুল্য। যদি কেউ আত্মশুদ্ধি করতে চায়, তাহলে তাকে সর্বপ্রথম দৃষ্টির হেফাজত করতে হবে। এ কাজটি খুব মুশকিল মনে হয়। চেষ্টা করা সত্ত্বেও চোখের হেফাজত করা কঠিন হয়ে পড়ে। সর্বত্র বেপর্দা, নগ্নতা, অশ্লীলতার সয়লাব। এমন পরিস্থিতিতে নিজের দৃষ্টিকে বাঁচানো মুশকিল মনে হয়, কিন্তু কেউ যদি ঈমানের মধুরতা লাভ করতে চায়, আল্লাহতায়ালার সঙ্গে সঠিক সম্পর্ক ও ভালোবাসা অর্জন করতে চায়, নিজের অভ্যন্তরীণ পরিচ্ছন্নতা, বিশুদ্ধতা ও পবিত্রতা লাভ করতে চায়, তাহলে তাকে এ তিতা ঢোক পান করতেই হবে। এ তিতা ঢোক পান করা ছাড়া সামনে অগ্রসর হওয়া যাবে না। কিন্তু এ তিতা ঢোক এমন যে, শুরুর দিকে তা খুব তিতা মনে হলেও একবার তার অভ্যাস করে নেওয়া হলে এ পরিমাণ মিষ্টি হয়ে যায়, এটা ছাড়া শান্তি পাওয়া যায় না।
আরবদের কফি : আরবের লোকেরা কফি পান করে থাকে। আপনারাও দেখেছেন, তারা ছোট ছোট পেয়ালায় কফি পান করে। আমার স্মরণ আছে, আমি যখন শিশু ছিলাম, ওই সময় কাতারের এক শায়খ করাচি এসেছিলেন। আমার বাবার সঙ্গে আমিও তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাই। সেই সাক্ষাৎকালে সেখানের বৈঠকে সর্বপ্রথম সেই কফি দেখি। সবাইকে কফি পান করতে দেওয়া হয়। কফি শব্দ শুনতেই মাথায় আসে, এটা মিষ্টি জিনিস। কিন্তু মুখে লাগিয়ে দেখি, তা এ পরিমাণ তিতা যে, গলাধঃকরণ করাও মুশকিল। কফি ছিল সামান্য। সবার সামনে মজলিসের মধ্যে কুলি করে ফেলে দিতেও পারছিলাম না। বাধ্য হয়ে কোনোমতে তা গিলে ফেলি। কিন্তু যখন গলা থেকে ভেতরে যায়, তখন তার স্বাদ অনুভব হয়। তারপর পরবর্তীতে আরেকটি মজলিসে এ কফি পান করার সুযোগ হয়। আস্তে আস্তে অবস্থা এ দাঁড়িয়েছে যে, এখন তা এত মজার ও স্বাদের অনুভূত হয় যে, তার কোনো শেষ নেই। কারণ, এখন তা পান করা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
মধুরতা ও স্বাদ উপভোগ হবে : এমনিভাবে এটাও এমন তিতা ঢোক যে, প্রথম প্রথম তা পান করা কঠিন মনে হয়; কিন্তু পান করার পর যখন তার আনন্দ ছেয়ে যাবে, তখন দেখবে, তার মধ্যে কত মজা রয়েছে। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে এ মধুরতা দান করুন। মোটকথা, এটা এমন তিতা জিনিস, একবার তার তিক্ততা সহ্য করো, অন্তরে পাথর বেঁধে একবার তার তিক্ততা গলাধঃকরণ করো, তাহলে ইনশাআল্লাহ আল্লাহতায়ালা এমন মধুরতা, এমন স্বাদ, এমন উপভোগ দান করবেন যে, তার সামনে এ কুদৃষ্টির স্বাদ অত্যধিক গৌণ ও তুচ্ছ মনে হবে। তার সামনে এর কোনোই মূল্য থাকবে না।
চোখ অনেক বড় নেয়ামত : চোখ একটি মেশিন। এটি আল্লাহতায়ালার এমন নেয়ামত যে, মানুষ তার কল্পনাও করতে পারে না; যা না চাইতেই পাওয়া গেছে। বিনামূল্যে মিলেছে। এর জন্য কোনো মেহনত করতে হয়নি। পয়সা ব্যয় করতে হয়নি। এ জন্য এ নেয়ামতের কদর নেই। যারা এ নেয়ামত থেকে বঞ্চিত, যারা অন্ধ, যাদের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে গেছে বা শুরু থেকেই যাদের এ নেয়ামত নেই, তাদের কাছে জিজ্ঞেস করে দেখো- এ চোখ কত বড় জিনিস। আল্লাহ না করুন! যদি দৃষ্টিশক্তি কমে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়, তখন সারা পৃথিবী অন্ধকার মনে হবে। সে সময় মানুষ নিজের সব সম্পদ ব্যয় করে হলেও এ দৌলত লাভ করতে চাইবে। এটা এমন এক মেশিন, আজ পর্যন্ত যা কেউ আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়নি।
চোখের সঠিক ব্যবহার : এ নেয়ামতের সঠিক ব্যবহার করা হলে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমি তোমাকে এর ওপর সওয়াবও দান করব।’ যেমন এ চোখের মাধ্যমে নিজের মা-বাবার প্রতি ভালোবাসার দৃষ্টিতে তাকাল, তাহলে হাদিস শরিফে এসেছে, একটি হজ ও একটি উমরা করার সওয়াব লাভ হবে। অপর এক হাদিসে এসেছে, স্বামী ঘরে প্রবেশ করে যদি নিজের স্ত্রীকে ভালোবাসার দৃষ্টিতে দেখে এবং বিবি স্বামীকে ভালোবাসার দৃষ্টিতে দেখে, তাহলে আল্লাহতায়ালা উভয়কে রহমতের দৃষ্টিতে দেখেন। যখন এ চোখকে সঠিক জায়গায় ব্যবহার করা হয়, তখন শুধু এই নয় যে, আল্লাহতায়ালা স্বাদ ও মজা দান করেন; বরং এর ওপর সওয়াব ও প্রতিদানও দিয়ে থাকেন। কিন্তু যদি এর অপব্যবহার করা হয়, অন্যায় জায়গায় দৃষ্টিপাত করা হয়, খারাপ জিনিস দেখা হয়, তখন এর আপদও মারাত্মক হয় এবং এ কাজ মানুষের অভ্যন্তরকে নষ্ট করে দেয়।
কুদৃষ্টি থেকে বাঁচার চিকিৎসা : এ কুদৃষ্টি থেকে বাঁচার একটাই পথ রয়েছে, আর তা হলো- সাহস করে কাজ নিতে হবে, দৃঢ় সংকল্প করতে হবে যে, এ দৃষ্টি দ্বারা আমি খারাপ জায়গায় দৃষ্টিপাত করব না। তারপর আত্মা যদি বিদীর্ণও হয়ে যায়, তবুও খারাপ জায়গায়, নিষিদ্ধ জায়গায় দৃষ্টিপাত করব না। হিম্মত ও সংকল্প করেই দৃষ্টিকে বাঁচাতে হবে, তারপর দেখবে আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে কেমন সাহায্য আসে। হজরত থানবি (রহ.) এ চোখকে কুদৃষ্টি থেকে বাঁচানোর জন্য কিছু তাদবির বলেছেন, তা স্মরণ রাখার মতো। তিনি বলেন, ‘কোনো নারী চোখে পড়লে মন যদি বলে, একবার দেখলে কী সমস্যা? কারণ, তুমি তো আর ব্যভিচার করবে না। তখন মনে রাখতে হবে, এটা নফসের ষড়যন্ত্র। বাঁচার উপায় হলো, তার কথামতো আমল করবে না।’ (আনফাসে ঈসা : ১/১৪২)। কারণ, এটা শয়তানের ধোঁকা। সে বলে, দেখলে কী সমস্যা? দেখা তো এ জন্য নিষেধ যে, মানুষ ব্যভিচারে লিপ্ত হবে। আর এখানে তো ব্যভিচারের সম্ভাবনা নেই। তাই দেখে নাও, কোনো সমস্যা নেই। হজরত বলেন, ‘এটা নফসের চক্রান্ত। এর চিকিৎসা হলো, তার কথামতো কাজ করবে না। যত আগ্রহই সৃষ্টি হোক, দৃষ্টি সরিয়ে নেবে।’
কামনামূলক চিন্তার চিকিৎসা : হজরত ডাক্তার সাহেব (রহ.) একবার বলেন, অন্তরে গোনাহের চাহিদা সৃষ্টি হলে এভাবে তার চিকিৎসা করবে, যেমন অন্তরে অপাত্রে দৃষ্টিপাত করে স্বাদ উপভোগ করার প্রচণ্ড চাহিদা সৃষ্টি হলে কল্পনা করবে যে, আমার বাবা যদি আমাকে এ অবস্থায় দেখেন, তাহলেও কি আমার এ আচরণ অব্যাহত থাকবে? কিংবা আমি যদি জানতে পারি, আমার শায়খ আমাকে এ অবস্থায় দেখছেন, তখনও কি এ কাজ অব্যাহত থাকবে? কিংবা আমি যদি বুঝতে পারি, আমার সন্তান আমার এ আচরণ দেখছে, তাহলেও কি এ কাজ চালু থাকবে? বলাবাহুল্য, এদের মধ্য থেকে যে কেউ আমার এ আচরণ দেখলে তখন আমি দৃষ্টি নত করে ফেলব। এ কাজ করব না। মনের মধ্যে যত চাহিদাই হোক না কেন, এ কাজ আর করব না। তারপর এ কথা চিন্তা করো, এদের দেখা না দেখার দ্বারা আমার দুনিয়া-আখেরাতে কোনো তারতম্য হবে না। কিন্তু আমার এ অবস্থা আহকামুল হাকেমিন আল্লাহতায়ালা দেখছেন। আমার এ বিষয়ে পরোয়া নেই কেন? কারণ, তিনি তো আমাকে এ কারণে শাস্তি দিতেও সক্ষম। এ চিন্তার বরকতে আশা করা যায়, ইনশাআল্লাহ আল্লাহতায়ালা এ গোনাহ থেকে হেফাজত করবেন।
পথচলার সময় দৃষ্টি নত রাখুন : হজরত ডা. আবদুল হাই আরেফি (রহ.) বলেন, যখন আল্লাহতায়ালা শয়তানকে জান্নাত থেকে বের করে দিলেন, তখন যেতে যেতে সে দোয়া করল, হে আল্লাহ! আমাকে কেয়ামত পর্যন্ত হায়াত দিন, সুযোগ দিন, অবকাশ দিন। আল্লাহতায়ালা তাকে অবকাশ দিলেন। তখন সে অহংকার দেখাল। বলল, ‘আমি ওই বান্দাদের কাছে তাদের ডান দিক থেকে, বাম দিক থেকে, সামনের দিক থেকে এবং পেছনের দিক থেকে যাব এবং চতুর্দিক থেকে তাদের ওপর আক্রমণ করব।’১০৫ হজরত বলেন, শয়তান চারদিকের কথা বর্ণনা করেছে। বোঝা গেল, শয়তান চারদিক থেকে আক্রমণ করে। কখনো সামনে থেকে, কখনো পেছন থেকে, কখনো ডান থেকে, কখনো বাম থেকে। কিন্তু দুটি দিকের কথা সে বলেনি, ছেড়ে দিয়েছে। এক ওপরের দিক, আরেক নিচের দিক। এ জন্য ওপরের দিক থেকেও নিরাপদ এবং নিচের দিক থেকেও নিরাপদ। এখন যদি ওপরের দিকে দৃষ্টি দিয়ে চলো, তাহলে ধাক্কা খাবে, পড়ে যাবে। এ জন্য এখন একটাই মাত্র রাস্তা বাকি আছে, তা হলো নিচের দিকে দৃষ্টি দিয়ে চলবে। তাহলে ইনশাআল্লাহ শয়তানের চারদিকের আক্রমণ থেকে মুক্ত থাকতে পারবে, নিরাপদে থাকতে পারবে। এ কারণে বিনা প্রয়োজনে ডানে-বামে তাকিয়ো না। আল্লাহ আল্লাহ করতে করতে নিচের দিকে দৃষ্টি রেখে চলো। তারপর দেখবে, আল্লাহতায়ালা কীভাবে তোমাকে হেফাজত করেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘মোমিনদের বলুন, তারা যেন নিজেদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে।’ (সুরা আরাফ : ১৭)। খোদ কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা দৃষ্টি নত রাখার নির্দেশ দিচ্ছেন। তারপর তার ফলাফল বলেছেন, এর কারণে লজ্জাস্থানের হেফাজত হবে, পবিত্রতা লাভ হবে।
ইউসুফ (আ.)-এর চরিত্র অবলম্বন করুন : ইউসুফ (আ.) যখন পরীক্ষার শিকার হলেন, তখন তিনি এ কাজই করেছিলেন। নিজের তরফ থেকে চেষ্টা করেছিলেন। যখন জুলায়খা চতুর্দিক থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে ইউসুফ (আ.)-কে গোনাহের দাওয়াত দিল, তখন ইউসুফ (আ.) নিজ চোখে দেখছিলেন, দরজায় তালা লাগানো আছে, বের হওয়ার কোনো পথ নেই। কিন্তু ইউসুফ (আ.) দরজার দিকে দৌড়ালেন। যখন স্বচক্ষে দেখা যাচ্ছে, দরজায় তালা লেগে আছে, তখন দৌড়ে যাবেন কোথায়? পথ তো নেই। কিন্তু যেহেতু দরজা পর্যন্ত দৌড়ে যেতে তিনি সক্ষম ছিলেন, তাই নিজের সাধ্যের কাজটুকু তিনি করলেন। নিজের ইচ্ছাধীন যা ছিল, তা তিনি বাস্তবায়ন করলেন। দরজা পর্যন্ত যাওয়ার ফলে তিনি আল্লাহতায়ালার কাছে এ দোয়া করার হকদার হলেন, ‘হে আল্লাহ! আমার সাধ্যে তো এতটুকুই ছিল। এর বেশি তো আমার সাধ্যে নেই। এবার সামনে আপনার কাজ।’ যখন নিজের অংশের কাজ করে আল্লাহর কাছে চাইলেন, ‘হে আল্লাহ! সামনের কাজ আপনার ক্ষমতাভুক্ত।’ তখন আল্লাহতায়ালাও নিজের অংশটুকু করলেন। তিনিও দরজার তালা ভেঙে দিলেন। যদিও তোমার সামনে এ দুনিয়াতে কোনো পথ ও আশ্রয়স্থল পাচ্ছ না, চতুর্দিক থেকে গোনাহের দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু তুমি পাগলের মতো পালাও। পাগলের মতো এমনভাবে পালাও, যেভাবে ইউসুফ (আ.) পালিয়েছিলেন। তুমি যতটুকু পালিয়ে যেতে পার, দৌড়াতে পার, ততটুকু দৌড়াও, বাকি আল্লাহর কাছে চাও। মানুষ যদি এ দুটি কাজ করে, এক নিজের সাধ্যমতো কাজ করা, দ্বিতীয় আল্লাহর কাছে চাওয়া, তাহলে নিশ্চিত বিশ্বাস করুন, দুনিয়াতে কামিয়াবি লাভের মূল কথা এটাই।
ভাষান্তর : মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ