মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ
সহকারী মুফতি, মারকাজুশ শাইখ আরশাদ আল মাদানি মানিকনগর, ঢাকা
প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
প্রশ্ন : কেউ যদি কোনো কারণে হজের মানত করে এবং তার নিজের ওপর আগ থেকেই হজ ফরজ থাকে, তবে সে কয়টি হজ করবে?
উত্তর : প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি লোকটি এখনও নিজের ফরজ হজ আদায় না করে থাকে, তবে তা আদায় করার সময় মানতের হজসহ একত্রে নিয়ত করে নিলেই একইসঙ্গে উভয়টি (ফরজ ও মানত হজ) আদায় হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে মানতের জন্য আলাদা হজ আদায় করতে হবে না। (খোলাসাতুল ফাতাওয়া : ১/২৭৭, আল বাহরুল আমিক : ৪/২২১০, আল বাহরুর রায়েক : ৩/৭৬, ফতোয়ায়ে ওয়ালওয়ালিজিয়্যা : ১/২৬৭)।
প্রশ্ন : সৌদি প্রবাসী একজন সেখানে মারা গেল। লাশ এনে দেশে দাফন করা হলো। সে হজ করতে না পারায় অসিয়ত করে গেছে। তার অসিয়তকৃত হজ সৌদি আরবে অবস্থানরত কারও মাধ্যমে করালে হবে নাকি বাংলাদেশ থেকে কাউকে পাঠাতে হবে?
উত্তর : মৃত ব্যক্তি বাংলাদেশি হলেও তিনি যেহেতু সৌদি আরবে বসবাস করছিলেন, তাই সেখান থেকেই হজ করা তার ওপর ফরজ ছিল। সুতরাং তার মৃত্যুর পর অসিয়তকৃত হজও সেখান থেকে আদায় করলেই চলবে। (আল মাবসুত লিস সারাখসি : ২৭/১৭৩, আল মাসালিক ফিল মানাসিক : ২/৯০৫, বাদায়েউস সানায়ে : ২/৪৭০, ফতোয়ায়ে খানিয়া ১/৩০৭, রদ্দুল মুহতার : ২/৬০৪)।
প্রশ্ন : ইহরাম অবস্থায় যেহেতু মাথা ও মুখ ঢাকা যায় না, তাই চাদরও গায়ে দেয়া যাবে না। কিন্তু কেউ যদি ঘুমের মধ্যে অজান্তে চাদর দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে, তার করণীয় কী?
উত্তর : কেউ যদি ভুলে ১২ ঘণ্টার কম সময় মুখ ঢেকে রাখে, তবে তাকে এক সদকাতুল ফিতর পরিমাণ সদকা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে দম ওয়াজিব হবে না। আর কাজটি অনিচ্ছাকৃত হলেও সদকা আদায় করা আবশ্যক। (আল মাবসুত লিস সারাখসি : ৪/১২৮, বাদায়েউস সানায়ে : ২/৪১০, ফতোয়ায়ে খানিয়া : ১/২৮৮, মানাসিক : ৩০৭, গুনয়াতুন নাসিক : ২৫৪)।
প্রশ্ন : তাওয়াফ ও সাঈর চক্করের ব্যাপারে সন্দেহ হলে করণীয় কী?
উত্তর : তাওয়াফ ও সাঈ আদায়কারীর কয় চক্কর হয়েছে, এ নিয়ে সন্দেহ হলে কম সংখ্যাটি ধরে নিয়ে সাতবার পূর্ণ করবে। উল্লেখ্য, গণনার সুবিধার্থে ৭ দানার তাসবি হাতে রাখতে পারবেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা : ১৩৫২৪, আল বাহরুল আমিক : ২/১২৩০, রদ্দুল মুহতার : ২/৪৯৬, মানাসিক : ১৬৬)।
প্রশ্ন : অভ্যাসের কারণে কেউ যদি এহরাম অবস্থায়ও নাকের দুই-তিনটি পশম উপড়ে ফেলে, তার করণীয় কী?
উত্তর : এহরাম অবস্থায় শরীরের যে কোনো পশম কাটা বা উপড়ানো নাজায়েজ। এ কারণে কয়েকটি রিয়াল সদকা করে দিলেই হবে। (ফতোয়ায়ে খানিয়া : ১/১৮৯, রদ্দুল মুহতার : ২/৪৮৯, মানাসিক : ৩২৮, গুনয়াতুন নাসিক : ২৫৬)।
প্রশ্ন : তাওয়াফের দু’রাকাত নামাজ কোথায় আদায় করা ওয়াজিব? কেউ যদি ভুলক্রমে দু’রাকাত পড়তে না পারে এবং দেশে চলে আসে, তখন করণীয় কী?
উত্তর : তাওয়াফের পর দু’রাকাত নামাজ পড়া ওয়াজিব। মসজিদে হারামে কিংবা হেরেমের এলাকায় পড়া মুস্তাহাব। কোনো কারণে হেরেমের এলাকায় পড়তে না পারলে অন্যত্র হলেও পড়ে নিতে হবে। তাই দেশেই ওই দু’রাকাত নামাজ পড়ে নিতে পারবে। এ কারণে কোনো জরিমানা দিতে হবে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা : ১৪৭৭৯, গুনইয়াতুন নাসিক : ১১১, মানাসিক : ১৫৫, ফতোয়ায়ে খানিয়া : ১/২৯২, ফতোয়ায়ে তাতারখানিয়া : ৩/৪৯৯, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/২২৬)।