ঢাকা ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ

সাবেক সহকারী মুফতি গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসা, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ
মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ

প্রশ্ন : আমার ডান হাতে একটা ব্যান্ডেজ লাগানো আছে। ডাক্তার ব্যান্ডেজে পানি লাগাতে নিষেধ করেছেন। এখন আমি কীভাবে অজু করব?

উত্তর : অজু করার সময় ব্যান্ডেজকৃত অংশে ভেজা হাত দিয়ে পুরো ব্যান্ডেজের ওপর মাসেহ করে নিলেই চলবে। অর্থাৎ মুছে দিলে হবে, পানি ব্যবহার করতে হবে না। তবে হাতের অবশিষ্ট খোলা অংশ ধুতে হবে। (ফাতাওয়ায়ে খানিয়া : ১/৫০)।

প্রশ্ন : অজুতে হাত-পায়ের আঙুল খিলাল করার বিধান কী? পায়ের আঙুল খিলাল করার নিয়ম কী?

উত্তর : যদি হাত-পা ধোয়ার সময় আঙুলের ফাঁকে পানি পৌঁছে থাকে, তাহলে খিলাল করা সুন্নত। আর যদি খিলাল করা ছাড়া ফাঁকে পানি না পৌঁছে, তাহলে খিলাল করা ফরজ। পায়ের আঙুল খিলাল করার নিয়ম হলো, বাম হাতের কনিষ্ঠা আঙুল দিয়ে ডান পায়ের কনিষ্ঠা আঙুলের মাধ্যমে খিলাল শুরু করতে হবে। খিলালের সময় পায়ের ওপর দিক দিয়ে আঙুল প্রবেশ করাতে হয়। তারপর আঙুলের গোড়া থেকে ওপরের দিকে টেনে নিয়ে আসতে হয়। (সুনানে আবি দাউদ : ১/১৯)।

প্রশ্ন : গোসলের পর নতুন করে অজু করার কোনো প্রয়োজন আছে?

উত্তর : গোসলের শুরুতে অজু করা সুন্নত। গোসলের মাধ্যমে যেহেতু অজু হয়ে যায়, তাই গোসলের পর অজু ভঙ্গের কারণ পাওয়া না গেলে নতুন করে অজু করতে হবে না। (আদ্দুররুল মুখতার : ১/৩২৩)। আয়েশা (রা.) সূত্রে বর্ণিত; তিনি বলেন, ‘রাসুুল (সা.) গোসলের পর নতুন করে অজু করতেন না।’ (তিরমিজি : ১০৭)।

প্রশ্ন : গোসলের সময় কিছু পানি শরীর থেকে গড়িয়ে বালতিতে পড়লে বালতির পানি কী নাপাক হয়ে যাবে?

উত্তর : গোসলের সময় শরীর থেকে পানি গড়িয়ে বালতিতে পড়লে বালতির পানি নাপাক হবে না। এক বর্ণনায় এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) ফরজ গোসলের সময় পাত্রে পানির ছিটা পড়া সম্পর্কে বলেন, ‘এতে কোনো সমস্যা নেই।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা : ৭৮৯, খোলাসাতুল ফাতাওয়া : ১/৮)।

প্রশ্ন : অজুর পর কালিমায়ে শাহাদত পড়া কী? এতে কোনো ফজিলত আছে? অনেককে আবার কালিমায়ে শাহাদত পড়ার সময় আকাশের দিকে তাকাতে দেখা যায়। এর হুকুম কী?

উত্তর : অজুর পর কালিমায়ে শাহাদত পড়া মুস্তাহাব। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজুু করার পর কালিমায়ে শাহাদত পড়বে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজাই খুলে দেয়া হবে। সে যে দরজা দিয়ে চাইবে, প্রবেশ করতে পারবে।’ (মুসলিম : ১/১২২)। অন্য বর্ণনায় কালিমায়ে শাহাদত পড়ার সময় আকাশের দিকে তাকানোর কথাও আছে। তাই সম্ভব হলে এর ওপর আমল করা ভালো। (সুনানে আবি দাউদ : ১/২৩, তিরমিজি : ১/১৮)।

প্রশ্ন : এক ব্যক্তি পেশাব ঝরার রোগে আক্রান্ত। তাই সে পেশাবের রাস্তায় টিস্যু গুঁজে রাখে। কিছু সময় পর টিস্যু খুললে দেখা যায়, তার ভেতরের অংশ কিছুটা ভেজা। এমতাবস্থায় তার নামাজের হুকুম কী? সে কোনো সময় ইমামতি করলে তার পেছনে সুস্থ লোকদের ইকতিদা শুদ্ধ হবে?

উত্তর : প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি পেশাবের রাস্তায় গুঁজে রাখা টিস্যুর ভেতরের অংশ শুধু ভিজে যায়, বাইরের অংশে তরলতা না পৌঁছে, বরং শুকনো থাকে, তাহলে যতক্ষণ ওই টিস্যু সেখানে লাগানো থাকবে, ততক্ষণ লোকটির অজু ভাঙবে না। এ অবস্থায় তার নিজের নামাজ পড়া এবং অন্যের ইমামতি করা সহিহ হবে। তবে টিস্যু খুলে ফেললে বা সেটি পড়ে গেলে অজু ভেঙে যাবে। এ ক্ষেত্রে তাকে নতুন অজু করে নামাজ পড়তে হবে। (বাদায়েউস সানায়ে : ১/১২৪, রদ্দুল মুহতার : ১/১৪৮)।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত