প্রশ্ন : ভুল করে কারও শরীরে পা লেগে গেলে, তাকে আমরা হাত দিয়ে সালাম করি। এরকম করা যাবে কি? করা না গেলে কী করতে হবে?
উত্তর : কারও প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও অসম্মান প্রদর্শনের পদ্ধতি কোরআন-হাদিস দ্বারা নির্ধারণ করার বিষয় নয়। এটা সম্পূর্ণভাবে স্থানীয় প্রচলন ও সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত। মৌলিকভাবে প্রত্যেক মোমিন অন্যসব মোমিনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে চলবে। অন্য কোনো মোমিনকে অসম্মান করবে না। কিন্তু সম্মান-অসম্মানের পদ্ধতি কী হবে, তা স্থানীয় প্রচলন ও সংস্কৃতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। আমাদের সমাজে কারও শরীরে পা লাগা মানে তাকে অসম্মান করা। এটা আমাদের সমাজিক সংস্কৃতি ও দৃষ্টিভঙ্গি। সে হিসেবে কারও শরীরে যদি পা লেগে যায় এবং তাতে যদি সে ব্যক্তি অসম্মান বোধ করেন, তাহলে তাকে স্যরি বলা বা তার কাছে মাফ চাওয়া উচিত।
কিন্তু একই কাজ যদি আরবে হয়, কারও গায়ে যদি পা লাগে, তাহলে তার কাছে মাফ চাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ আরবের সংস্কৃতিতে গায়ে পা লাগাকে অসম্মানের প্রতীক মনে করা হয় না। একজনের পা আরেকজনের গায়ে লাগলে সেটাকে তারা দোষের মনে করে না। বরং একজন আরেকজনকে ডাকার জন্য পা দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এটা আরবের স্বাভাবিক সংস্কৃতি। হাদিসের বিভিন্ন বর্ণনায়ও এ সংস্কৃতির প্রমাণ পাওয়া যায়।
মোটকথা বিষয়টা স্থানীয় প্রচলনের ওপর নির্ভরশীল। উদাহরণস্বরূপ এক দেশে একটা শব্দকে গালি হিসেবে ব্যবহার করা হয়; একই শব্দ অন্য এলাকায় বুলি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তাহলে এই শব্দটাকে যে এলাকায় গালি হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেখানে এই শব্দের ব্যবহার করা গোনাহ। তবে যেখানে এ শব্দটা গালি হিসেবে ব্যবহার করা হয় না, সেখানে এই শব্দ ব্যবহার করলে গোনাহ হবে না। গায়ে পা লাগার ব্যাপারটাও ঠিক এরকম। সুতরাং আমাদের দেশে কারও গায়ে পা লাগলে যেহেতু মানুষ অসম্মান বোধ করে, সেহেতু কারও গায়ে পা লাগলে তার কাছে ক্ষমা চাওয়াটা উচিত।