ঢাকা ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আজ চট্টগ্রামে বের হবে বর্ণাঢ্য জশনে জুলুস

আজ চট্টগ্রামে বের হবে বর্ণাঢ্য জশনে জুলুস

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে প্রতি বছরের ন্যায় চট্টগ্রামে আয়োজিত ঐতিহাসিক জশনে জুলুসকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জুলুস বা ইসলামি শোভাযাত্রা হিসেবে রেকর্ড বইয়ে নাম তুলতে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে সংশ্লিষ্টরা। জশনে জুলুস আয়োজনকারী তরিকত্ব ভিত্তিক সংস্থা আনজুমান এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট গিনেজ কর্তৃপক্ষের কাছে এই আবেদন করেছে।

আঞ্জুমানের সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, আমাদের সংস্থার আশেক ভাইয়ারা আবেদন করেছে বলে আমি জানতে পারি এবং আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার জশনে জুলুছ পর্যবেক্ষণ করবে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের ম্যানেজমেন্ট টিম। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী গিনেজ বুক কর্তৃপক্ষের পর্যবেক্ষণ টিম গতকাল শনিবার চট্টগ্রামে আসেন এবং আজ তারা জশনে জুলুছ সরাসরি পর্যবেক্ষণ করবেন। গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা যায়, এবারের ৫০তম জুলুসে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তাদের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। একই সঙ্গে গিনেজ বুক কর্তৃপক্ষের পর্যবেক্ষণ টিমের জন্য তাদের তদারকি আরও দ্বিগুণ হয়ে গেছে।

গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় পরিষদের সূত্র জানায়, আনজুমান ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় এই জুলুস আজ সকাল ৮টায় চট্টগ্রামের ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকা-এ কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে শুরু হবে। জুলুসে নেতৃত্ব দেবেন পাকিস্তান থেকে আগত আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ (মা.জি.আ.) তিনি সিরিকোর্ট শরিফের দরবারে আলিয়া কাদেরীয়া শেতালুল-এর সাজ্জাদানশীন। এতে আরও অংশগ্রহণ করবেন আল্লামা পীর সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ ও শাহজাদা আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ।

আয়োজক সংশ্লিষ্টরা জানান, জুলুস শুরুর পর নগরীর বিবিরহাট থেকে মুরাদপুর হয়ে মির্জারপুল, কাতালগঞ্জ হয়ে অলিখাঁ মসজিদ চকবাজার, কেয়ারি মোড়, প্যারেড ময়দানের পশ্চিম পাশ হয়ে চট্টগ্রাম কলেজ, গণি বেকারী, খাস্তগীর স্কুল, শহীদ সাইফুদ্দিন খালেদ রোড হয়ে আসকার দিঘি, কাজীর দেউড়ি, আলমাস, ওয়াসা, জিইসি, দুই নম্বর গেট, পুনরায় মুরাদপুর বিবিরহাট হয়ে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন জুলুস ময়দানে দুপুর ১২টায় সমাপনী মাহফিল, আবার একই ময়দানে জোহরের নামাজ এবং নামাজ শেষে দোয়া ও আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার জানান, ১৯৭৪ সালে (১৩৯৫ হিজরি) থেকে আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ (র.) নির্দেশনা ও রূপরেখা অনুসারে দেশে সর্বপ্রথম চট্টগ্রামে জশনে জুলুস আত্মপ্রকাশ করে। সর্বপ্রথম জুলুস চট্টগ্রামের কোরবানিগঞ্জ বলুয়ারদিঘির পাড়ের খানকাহ-এ কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে শুরু হয়। আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় দেশের প্রথম জশনে জুলুসের নেতৃত্ব দেন আনজুমান ট্রাস্টের তৎকালীন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আলহাজ নূর মোহাম্মদ আল কাদেরী। আর ১৯৭৬ সালে হুজুরকেবলা তৈয়্যব শাহ (র.) বাংলাদেশ সফরে আসেন। এরপর তিনি নিজেই জুলুসে নেতৃত্ব দেন, যা ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। তিনি প্রতিবছর ৯ রবিউল আউয়াল ঢাকা এবং ১২ রবিউল আউয়াল চট্টগ্রামে আয়োজিত জশনে জুলুসের নেতৃত্ব দেন।

তিনি আরও বলেন, এবার জুলুসে অন্য বছরের তুলনায় লোক সমাগম বেশি হবে। আমরা ধারণা করছি, এবছর অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দেবে, আমাদের বিশ্লেষণ আন্দাজ করা হচ্ছে, এবারে কমপক্ষে ৭০ লাখ আশেকে রাসূলের সমাগম হবে। জুলুসে শৃঙ্খলায় ৫/৬ হাজার আঞ্জুমান সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্য কাজ করবেন। সেই সঙ্গে থাকবেন গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত