ঢাকা ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের বার্ষিক প্রতিবেদন

গণপিটুনিতে নিহত ৩৬ ধর্ষণের শিকার ৯৩৬ নারী

গণপিটুনিতে নিহত ৩৬ ধর্ষণের শিকার ৯৩৬ নারী

বিদায়ি ২০২২ সালে গণপিটুনিতে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে আইনশ্ঙ্খৃলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের, কথিত ক্রসফায়ারে মারা গেছেন চারজন। মানবাধিকারবিষয়ক সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তাদের বাৎসরিক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে সারা দেশে ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ৯৩৬ নারী। এছাড়া বছরজুড়ে ২২৬ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি ও পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন।

গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আসক কার্যালয়ে ২০২২ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে বাৎসরিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন আসকের পরিচালক (কর্মসূচি) নিনা গোস্বামী এবং জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক আবু আহমেদ ফয়জুল কবির। এছাড়া সম্মেলনটিতে সভাপতিত্ব করেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আসকের নির্বাহী পরিচালক মো. নূর খান। আসক জানায়, ২০২২ সালে বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, নিপীড়নের শিকার হয়েছেন ২২৬ জন সাংবাদিক। এর মধ্যে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হামলার শিকার হয়েছেন অন্তত ৭৯ জন সংবাদ কর্মী। দুর্বৃত্তদের গুলিতে কুমিল্লায় নিহত হন একজন সাংবাদিক। এছাড়াও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক লাঞ্ছিত ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় বাধা প্রদানের শিকার হয়েছেন ১৪ জন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ বছর এ ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে। আসক তথ্যসংরক্ষণ ইউনিটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে শুধু র‌্যাবের সঙ্গে কথিত ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ বা গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন চারজন। কুমিল্লা, মানিকগঞ্জ, কক্সবাজার ও নারায়ণগঞ্জ জেলায় এই ঘটনাগুলো ঘটে।

এছাড়া বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মারা যান ১৫ জন। এর মধ্যে গ্রেপ্তারের পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শারীরিক নির্যাতনে চারজন, হার্ট অ্যাটাকে একজন এবং গ্রেপ্তারের আগে শারীরিক নির্যাতনে চারজন মারা যান। এছাড়া থানা হেফাজতে আত্মহত্যা করেছেন দুইজন এবং অসুস্থ হয়ে মারা যান চারজন। থানা হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগের পর নানা সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সিসিটিভি ওই সময়ে কার্যকর ছিল না বলে দাবি করে, যা তাদের দায়িত্বশীল আচরণের পরিপন্থি বলেও উল্লেখ করে আসক। আসক জানায়, এ বছর দেশের কারাগারগুলোর মধ্যে ২১টি কারাগারে অসুস্থতাসহ বিভিন্ন কারণে মারা গেছেন ৬৫ জন। এর মধ্যে কয়েদি ২৮ এবং হাজতি ৩৭ জন। এর মধ্যে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে সর্বাধিক ১৬ জন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ১৪ জন এবং চট্টগ্রাম কারাগারে ১২ জন মারা যান। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে সংগৃহীত আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ, গুম ও নিখোঁজের শিকার হন পাঁচ জন। এর মধ্যে পরবর্তী সময়ে চারজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, পরবর্তীতে ফিরে এসেছেন একজন। আসক জানায়, যখনই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে আটকের ঘটনা ঘটছে, তখন পরিবার ও স্বজনদের দাবির মুখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার বা আটকের কোনো তথ্য না দিয়ে সরাসরি নাকচ করে দিচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত