ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আগামীকালের সাকরাইন উৎসব আমেজে পুরান ঢাকা

আগামীকালের সাকরাইন উৎসব আমেজে পুরান ঢাকা

পুরান ঢাকার একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন উৎসব হচ্ছে সাকরাইন বা পৌষসংক্রান্তি। প্রতি বছরের মতো এবছরও পুরান ঢাকার অলিগলিতে চলছে সাকরাইন উৎসবের প্রস্তুতি। এই উৎসবের মূল আকর্ষণ রংবেরঙের ঘুড়ি। পুরান ঢাকার আকাশ রংবেরঙের ঘুড়িতে ছেয়ে যায় এই উৎসবে। শনিবার (১৪ জানুয়ারি) ঢাকার আকাশে উড়বে রংবেরঙের ঘুড়ি। আর তা নিয়ে ছোট-বড় সবার মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। উৎসব সামনে রেখে পুরান ঢাকার শাঁখারিবাজারে চলছে ঘুড়ি ও অন্য উপকরণ (ঘুড়ি, নাটাই, সুতো) বিক্রির উৎসব। ক্রেতাদের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো। শাঁখারিবাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতি বছর সাকরাইনে লক্ষাধিক ঘুড়ি বিক্রি করেন। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে কোটি টাকার ঘুড়ি, নাটাই ও সুতো বিক্রি হয় বলেও জানান তারা।

চশমাদার, কাউটাদার, পঙ্খিরাজ, প্রজাপতি, চক্ষুদার, ঈগল, সাদা ঘুড়ি, চারবোয়া, দুই বোয়া, টেক্কা, লাভ ঘুড়ি, ৩ টেক্কা, মালাদার, দাবা ঘুড়ি, বাদুর, চিল, অ্যাংরি বার্ডসহ নানা নামে ঘুড়ি বিক্রি হচ্ছে শাঁখারিবাজারে। এছাড়া এবার আমির খান, শাহরুখ খানসহ অনেক সুপার স্টার-কিংবদন্তির ছবিসহ ঘুড়ি উড়বে ঢাকার আকাশে। শাঁখারিবাজারে সাধারণ ঘুড়ি ৮ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিদেশি ও নকশা করা ঘুড়ি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকায়। নানা রকমের বাটিওয়ালা, মুখবান্ধা, লোহা নাটাই, কাঠের নাটাই, চাবাডী নাটাই বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৮০০ টাকায়। ড্রাগন সুতা, ভূত সুতা, বিলাই সুতোসহ ঘুড়ি ওড়ানোর বিভিন্ন ধরনের সুতা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেক ৫০০ টাকায়। শাঁখারিবাজারের নিখিল চন্দ্র বলেন, সাকরাইনকে সামনে রেখে ভালোই বেচাকেনা চলছে আমাদের। ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা এখানে আসেন ঘুড়ি কিনতে। আমাদের দোকানে ৮ থেকে ১০ রকমের ঘুড়ি রয়েছে। ঘুড়ির সঙ্গে নাটাই, সুতাও ভালোই বিক্রি হচ্ছে। অপূর্ব প্রোডাক্টের ব্যবসায়ী তিতাস বলেন, আমার ছোট দোকান। বড় কোনো ক্রেতা আসে না। তরুণ-তরুণীরা আসে বেশি। সবমিলিয়ে মোটামুটি ভালোই চলছে বেচাকেনা। শাঁখারিবাজারে লালবাগ থেকে ঘুড়ি কিনতে এসেছে ইমরান ও তার বন্ধু সাইদ। দু’জনই সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তারা বলেন, প্রতি বছর সাকরাইন এলেই আমরা সবাই মিলে ঘুড়ি কিনতে এখানে আসি। এখানে সব রকমের ঘুড়ি পাওয়া যায়। নারিন্দা থেকে সোহেল রানা তার ১০ বছর বয়সি সন্তান সাদিতকে নিয়ে এসেছেন ঘুড়ি কিনতে। তিনি বলেন, একসময় আমরা ঘুড়ি উড়িয়েছি। এখন আমাদের বচ্চাদের সময়, তাই তাদের প্রতি বছর ঘুড়ি কিনে দিতে হয়। ওদের ঘুড়ি ওড়ানো দেখে আমরাও সেই সোনালি অতীতকে স্মরণ করি। শনিবার সকাল থেকে শুরু হবে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী উৎসব সাকরাইন। মহাভারতে যেটাকে মকরক্রান্তি বলা হয়। এই দিনে দিনভর ঘুড়ি উড়ানোর পাশাপাশি সন্ধ্যায় বর্ণিল আতশবাজি ও রংবেরঙে ফানুসে ছেয়ে যায় বুড়িগঙ্গা তীরবর্তী শহরের আকাশ। এখন পুরান ঢাকা ছাড়াও ঢাকার অন্যান্য এলাকায় এই উৎসব পালন করা হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত