রাজধানীতে এক দিনে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে তিনজন
প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীতে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় গণপরিবহণের যাত্রীদের উদ্বেগ বেড়েছে। ইদানীং প্রায়ই অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে অনেকের সর্বস্ব খোয়ানোর খবর পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার পৃথক ঘটনায় ব্যবসায়ীসহ তিনজন অজ্ঞানপার্টির খপ্পরে পড়েছেন। তাদের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা হলেন- রুমান ঢালি, মেজবাহ উদ্দিন ও রিয়াজ হাওলাদার। গতকাল সোমবার দুপুর ২টার দিকে তাদেরকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্টোমাক ওয়াশ করানোর পর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে তাদের। রুমান ঢালিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া বাসযাত্রী শহীদুল্লাহ প্রধান জানান, গতকাল ১টার দিকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনে থেকে তিনি দিশারি পরিবহণের একটি বাসে উঠেন। বাসটি কদমতলীর দিকে যাচ্ছিল। বাসে উঠার পর তিনি দেখেন, একটি সিটে রুমান ঢালি নামে ওই ব্যক্তি অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। বাসটি শাহবাগ মোড়ে পৌঁছালে অন্য যাত্রীদের সহযোগিতায় তিনি তাকে নামিয়ে সিএনজি অটোরিকশায় করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তখন তার সঙ্গে থাকা এনালগ ফোন থেকে তার স্বজনদের খবর দেন। বাসের ভেতর এক হকার উঠেছিল ভেষজ ওষুধ বিক্রি করতে। তার কাছ থেকে রোমান চেতনানাশক মেশানো কিছু খেয়েছেন বলে ধারণা বাসটির যাত্রীদের। ভুক্তভোগী রুমান ঢালির ভাবি রুমানা ফেরদৌসি জানান, মিরপুর-১ আনসার ক্যাম্প এলাকায় থাকেন তারা। সেখান ‘লাভলি সেনেটারি’ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে রুমানের। মালামাল কেনার জন্য ৪০ হাজার টাকা নিয়ে বংশাল আলুবাজার যাচ্ছিলেন তিনি। তার সেই টাকা খোয়া গেছে। এদিকে, মেজবাহ উদ্দিনের বাসা খিলগাঁও তালতলায়। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং সেক্টরে কাজ করেন তিনি। পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে বেলা ১২টার দিকে স্বজনরা শাহবাগ মোড় থেকে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেন। হাসপাতালে স্টোমাক ওয়াশ করানোর পর কিছুটা সুস্থ হলে তিনি নিজেই জানান, বাসাবো থেকে মিডওয়ে পরিবহণের বাসে উঠেন তিনি। বাসে এক ব্যক্তি তাকে ডাব খেতে দেন। এরপর আর কিছু স্মরণ নেই তার। তার সঙ্গে দেড় হাজার টাকা ও ২টি মোবাইল ফোন ছিল বলে জানান তিনি। সেই টাকা ও ফোন খোয়া গেছে। অপরদিকে, রিয়াজ হাওলাদার থাকেন ফার্মগেট কুতুববাগ এলাকায়। ফার্মগেটে একটি লাইব্রেরির সেলসম্যাস হিসেবে চাকরি করেন। সকালে বই নিয়ে মিরপুর-১ এ যান। সেখান থেকে বই বিক্রির ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে আবার লাইব্রেরিতে ফিরছিলেন। দুপুরে তারা খবর পান, এক রিকশাচালক ইন্দিরা রোডে তাদের লাইব্রেরির সামনে তাকে রেখে গেছে। তখন তারা সেখান থেকে রিয়াজকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। তার কাছ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খোয়া গেছে বলে অভিযোগ তাদের। রিয়াজের সহকর্মী সজিব এসব কথা বলেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া জানান, দুপুর ২টার দিকে পরপর তাদের তিনজনকে পৃথক সময় অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। স্টোমাক ওয়াশ করার পর মেডিসিন বিভাগে ভর্তি দেয়া হয়েছে। তারা অজ্ঞান পার্টির খবর পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাগুলো সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।