জলবায়ু পরিবর্তন রোধ ও সুষ্ঠুভাবে পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে শিশুদের সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য জলবায়ু সংক্রান্ত বিষয়ে পাঠ্যবইয়ের অধ্যায়ে এ বিষয়গুলো তুলে ধরা প্রয়োজন। তাদের জন্য এ সংক্রান্ত ফান্ড তৈরি করে স্বাস্থ্য ও শিক্ষার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়ার দাবি তুলেছে শিশুরা। জলবায়ু ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে শিশুদের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রচারাভিযান ‘জেনারেশন হোপ’ শুরু করেছে সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের (বিটিএস) সহযোগিতায় শিশু-যুবদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করা হয়।
আয়োজকরা বলেন, জেনারেশন হোপ সেভ দ্য চিলড্রেনের একটি বৈশ্বিক ফ্ল্যাগশিপ প্রচারাভিযান, যার উদ্দেশ্য ভেঙে পড়া সিস্টেমকে মেরামত করা, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও জলবায়ু জরুরি সংকটের সঙ্গে জড়িত সমস্যাগুলো মোকাবিলার মাধ্যমে শিশু এবং তাদের গ্রহের যত্ন নেয়া। এই প্রচারাভিযানের লক্ষ্য শিশুদের অধিকার ও কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য ন্যায্য তহবিল নিশ্চিত করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক বৈষম্য মোকাবিলা করা। তারা বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘চাইল্ড হিয়ারিং’ সেশনের মাধ্যমে সেভ দ্য চিলড্রেন আন্তর্জাতিক ৪১টি দেশের ৫৪ হাজার ৫০০ এরও বেশি শিশুর সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক বৈষম্য সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা, ভবিষ্যতের জন্য তাদের আশা ও এই সংকটগুলো সমাধানের জন্য কী করা দরকার বলে তারা মনে করে সে সম্পর্কে আরও জানতে কথা বলেছে। জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ড. ইয়ান ফ্লাই বলেন, শিশু ও তরুণদের একটি প্লাটফর্ম তৈরি এবং তাদের কথা বলার সুযোগ তৈরি করে দেয়ার মাধ্যমে উল্লেখিত সংকটগুলো মোকাবিলা করাই সেভ দ্য চিলড্রেনের লক্ষ্য। আমরা বিশ্বাস করি, জেনারেশন হোপ এটি করার জন্য একটি ভালো মাধ্যম। উপস্থিত শিশুরা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাদের ওপর প্রভাব তুলে ধরে জানায়, তাদের মধ্যে অনেকে রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের ছয়টি ঋতু হারিয়ে গেছে। তাপমাত্রা বেড়ে গেছে, বরফ গলে যাচ্ছে। পানির লবণাক্ততা বেড়ে গিয়ে মিঠা পানির সংকট তৈরি হয়েছে। এর জন্য উন্নত দেশগুলো দায়ি। জলাবায়ু পরিবর্তন রোধে বড়দের সঙ্গে শিশুদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করার দাবি জানায় তারা। শিশুদের পাঠ্যবইয়ে জলবায়ু সংক্রান্ত বিষয়টি পাঠ হিসেবে যুক্ত করারও দাবি জানানো হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, আমরা সার্বিকভাবে একটি কঠিন সময়ের মধ্যে রয়েছি। এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে শিশু-তরুণদের নিয়ে কাজ করতে হবে। তাদের লস অ্যান্ড ড্যামেজ বিষয়ে সচেতন করে তুলতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এখন সব মানুষের ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। এর ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তারা।