জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, গত সোমবার ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতির ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য দেয়ার সময় লালমনিরহাট-১ এর সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন বক্তব্য দানকালে রাষ্ট্রপতির ভাষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, এমন যে বিষয়গুলো উপস্থাপন করেছেন এমন সব অপ্রাসঙ্গিক কথা এক্সপাঞ্জ করা হবে। একই সঙ্গে বিরোধীদলের এমপি কাজী ফিরোজ রশীদ যে অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করেছেন তাও এক্সপাঞ্জ করা হবে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু গত সোমবার মোতাহার হোসেন ‘এরশাদ সাহেবকে ভোটে হারিয়েছি এবং জামানত বাজেয়াপ্ত করেছিলাম’ এমন মিথ্যা ও বানোয়াট কথা প্রত্যাহার করা নয়তো এক্সপাঞ্জ করার দাবি জানান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্পিকার মোতাহার হোসেনের এরশাদ সাহেবকে হারানো ও জামানত বাজেয়াপ্তসহ রাষ্ট্রপতির ভাষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, এমন সব বক্তব্য এক্সপাঞ্জের কথা ঘোষণা করেন।
পয়েন্ট অব অর্ডারে জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে একটা মহাজোট হয়েছিল। জাতীয় পার্টি সব সময় নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং জাতীয় পার্টি একটি নির্বাচনমুখি দল। সংসদের ভেতরে ফাইল ছোড়াছুড়ি, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা, পার্লামেন্ট বর্জন করা, অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করা একটি খারাপ প্রাকটিস। আমরা প্রমাণ করেছি একটি কার্যকর বিরোধীদল হওয়ার ও একটি ভালো কালচার সৃষ্টির চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে জাতীয় পার্টি নির্বাচন বর্জন করে। শেষ মুহূর্তে পার্টির চেয়ারম্যান সব মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। এ নির্বাচনে বিএনপিসহ কোনো দলই আসেনি। জাতীয় পার্টি যদি নির্বাচনে না আসে তাহলে বাংলাদেশে একটি সাংবিধানিক শূন্যতার সৃষ্টি হতো, অসাংবিধানিক অবস্থার সৃষ্টি হতো। এমতাবস্থায় বেগম রওশন এরশাদ এবং আমাদের কয়েকজন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে বিট্রে করে, বেইমানি করে বিদ্রোহ করে বেগম এরশাদের নেতৃত্বে নির্বাচন করেছিলাম। সে নির্বাচনে এরশাদ সাহব লালমনিরহাট, রংপুরসহ কয়েকটি আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন এবং পরে তা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। তিনি রংপুরেও নির্বাচন করতে চাননি, আমরা শুধুমাত্র লিগার্সী মেনটেন করার জন্য, এই সংসদে এরশাদ সাহেবের মতো লোক আছেন সেটা দেখানোর জন্য, সেদিন আমরা চেষ্টা করে রংপুরে এরশাদ সাহেবকে বিজয়ী হওয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। এ সময় এমপি মোতাহার হোসেনের দিকে আঙুল তুলে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে যদি আমরা নির্বাচনে না আসতাম তাহলে উনি প্রতিমন্ত্রী তো হতে পারতেনই না, এমনকি এমপিও হতেন না। তিনি প্রতিমন্ত্রী/মন্ত্রী হয়েছিলেন আমরা নির্বাচনে এসেছিলাম বলে। এরশাদ সাহেব লালমনির হাটে নির্বাচন তো করেন তাই, প্রত্যাহার করেছিলাম। তার মতো লোক কীভাবে বলে এরশাদ সাহেবকে তিনি পরাজিত করেছিলেন। চুন্নু এ সময় মোতাহার হোসেনের এ মিথ্যা ও বানোয়াট কথা প্রত্যাহার নয়তো এক্সপাঞ্জ করার দাবি জানান।