তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার দাবি

প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতি বছর ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটছে। জনসংখ্যার অনুপাতের বিচারে তামাক ব্যবহারের মাত্রা এবং এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবের শিকার হওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। এসব তথ্য উল্লেখ করে ‘ধূমপান ও তামাক আইন শক্তিশালীকরণ’ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ‘উন্নয়ন সমন্বয়’। গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তারা ধূমপান ও তামাক ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক এবং তামাক আইন শক্তিশালী করা এবং এই আইনের প্রয়োগ নিয়ে বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্যে উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘তরুণরা যাতে ধূমপানে উৎসাহিত না হয়, সে জন্য আইন করতে হবে। ডেজিগনেটেড স্মোকিং এরিয়া (ডিএসএ) বাতিল করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নিয়ম করেছিলাম তামাক চাষে কোনো কৃষি ঋণ দেয়া হবে না। আমরা এ আইন এখনো বহাল রেখেছি। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন করে কৃষি ঋণ বন্ধ করেছি। তবে তামাক শিল্প কিন্তু শেষ হয়ে যায়নি। তামাক আমাদের বন্ধ করতে হবে। শুধু আইন দিয়ে এটা বন্ধ করা যাবে না। কিন্তু আইন থাকা জরুরি। এখন তরুণরা যে ই-সিগারেট ব্যবহার করছে, এগুলোও আইনের আওতায় এনে বন্ধ করতে হবে। আগামীতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন সুস্থ হয়ে বেড়ে উঠতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করে যেতে হবে।’ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যমল দত্ত বলেন, ‘ভোরের কাগজে আমি ৩২ বছর ধরে কাজ করছি। আমরা কখনো টোবাকোর বিজ্ঞাপন ছাপিনি। তখনকার সময়েই আমরা এ সাহসিকতা দেখিয়েছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকার কী আসলেই চায় তামাক কমুক? সরকার চাইলে কালকেই ধূমপান বন্ধ হয়ে যাবে।’ এটিএন নিউজের চীফ এক্সিকিউটিভ এডিটর মুন্নী সাহা বলেন, ‘তামাক কোম্পানিগুলো যে সিএসআর করে সেগুলো বন্ধ করতে হবে।’ নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের উদ্দেশে তিনি ধূমপান ছেড়ে দিয়ে ধূমপান বিরোধী রিপোর্ট করার আহ্বান জানান। ইউএনডিপি বাংলাদেশের কান্ট্রি ইকোনমিস্ট ড. নাজনীন আহম্মেদ বলেন, ‘সচেতনতা এবং আইন করার একটি ইমপ্যাক্ট সমাজে আছে। তাই আইনের প্রয়োগ করতে হবে এবং সচেতনতা বাড়াতে হবে। পাঠ্যপুস্তকেও তামাকের খারাপ দিক লেখা থাকতে পারে।’ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, রাঙ্গামাটির সাবেক চেয়ারম্যান নব্য বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বলেন, ‘ধূমপানের সঙ্গে আমাদের অন্যান্য মাদকের দিকেও লক্ষ্য দেয়া উচিত। আশা করি, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৪০ সালের মধ্যে আমরা এটা বন্ধ করতে পারবো।’ উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানের সভাপতিত্বে এবং জ্যেষ্ঠ প্রকল্প সমন্বয়কারি শাহীন উল আলমের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলন আরও ছিলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাবেক ফুটবলার শেখ মোহাম্মদ আসলাম, নাট্যকার রুমা মোদক, সাবেক জাতীয় ফুটবলার রেহানা পারভীন।