ঢাকা ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কলতাবাজারে পরিত্যক্ত পানির ট্যাংক

চলছে মাজার ব্যবসা ও চাঁদাবাজি সন্ধ্যার পর বসে সিদ্ধির আসর

চলছে মাজার ব্যবসা ও চাঁদাবাজি সন্ধ্যার পর বসে সিদ্ধির আসর

রাজধানী ঢাকার সর্বপ্রথম পানি সরবরাহকারী ট্যাংকটি পরিত্যক্ত হয়ে এখন দখলদারদের হাতে। এখানে ট্যাংক দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে মাজার ব্যবসা। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে চাঁদাবাজি। তাছাড়া এটি ঢাকা ওয়াসার অধীনে থাকার কথা থাকলেও বেদখল হওয়ার বিষয়ে জানেই না ওয়াসা। এদিকে মাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পানির ট্যাংকটি লিজ নেয়া হয়েছে।

জানা যায়, ১৮৬৪ সালে ঢাকা পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর পৌরবাসীকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য নবাব পরিবার আর্থিক সহায়তা করে। এ অর্থ দিয়ে তখন প্রথম এ পানির ট্যাংকটি নির্মাণ করা হয়েছিল।

সরেজমিন দেখা যায়, পুরান ঢাকার কলতাবাজার এলাকায় রয়েছে ঢাকার প্রথম পানির ট্যাংক। ট্যাংকটি এখন আর ব্যবহৃত হয় না, রয়েছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। ট্যাংকের নিচে গড়ে তোলা হয়েছে মাজার। এক পাশে সীমানাপ্রাচীর ভেঙে করা হয়েছে মাজারে ঢোকার গেট। ভেতরে তৈরি করা হয়েছে রয়েছে তিনটি কক্ষ। ট্যাংকটির সীমানাঘেঁষে বানানো হয়েছে বেশ কয়েকটি দোকানপাট।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে এসব দোকানগুলো থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা তোলে মাজারের লোকজন। ফুটপাতের পাশে বসা চটপটি-ফুচকার দোকান, ডিমের দোকান থেকেও তোলা হয় চাঁদা। দৈনিক ও মাসিক চুক্তিতে এসব দোকান ও সবজি বিক্রেতাদের থেকে তোলা হয় ১০ থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত। এছাড়া সন্ধ্যার পর মাজারের ভেতরে বসে সিদ্ধির আসর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানদার বলেন, ‘মাজারের লোকজন থেকে আমরা দোকান ভাড়া নিয়েছি মাস চুক্তিতে। জায়গাটা তাদের না আমরাও জানি। শুনেছি ওয়াসার জায়গা এটা। প্রশাসনও তো কিছু বলে না। মাজারের লোকজনই এ জায়গা নিয়ন্ত্রণ করে। মাজারের দায়িত্বে থাকা একজন বলেন, ‘দরবারের তত্ত্বাবধানে বর্তমানে রয়েছেন আনিসুল হক। আর আমরা যারা দিনমজুর রয়েছি তারা দরবারের খেদমত করি। আজ থেকে ৬০ বছর আগে ট্যাংকটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। তখন থেকে এখানে এ দরবার শরিফ রয়েছে। ৯৯ বছরের জন্য এটা লিজ নেয়া হয়েছিল। যতদূর জানি এটা ওয়াসার সম্পত্তি ছিল। পরে সিটি করপোরেশন নিয়ে নিয়েছে। কিছুদিন পর এটার মেরামতের কাজও করা হবে। তবে নিচে দরবার থাকবে। দোকানদার থেকে চাঁদা তোলা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কারো থেকে এমন কিছু নেয়া হয় না। মানুষ খুশি হয়ে যা দেন, তা নেয়া হয়। আর সীমানাঘেঁষে যে চা দোকানদার তিনি ১০০ করে দেন আমরা যারা দেখাশুনা করি তাদের জন্য। পানির ট্যাংকটির পাশের রাস্তায় দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, মাজারটিতে সন্ধ্যার পর সিদ্ধির (গাঁজা) আসর বসে। যেহেতু ট্যাংকটি ব্যবহার হয় না সংশ্লিষ্টরা চাইলে এটি ভেঙে বহুতল পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করতে পারে।

ঢাকা ওয়াসার ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম শহীদ উদ্দিন বলেন, ‘ওই ট্যাংকটা এখন অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে। দখলের বিষয়টা জানা নেই। আমরা দেখব বিষয়টা, তেমন হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত