রাজধানীতে পায়ে চালিত রিকশার জমা ১২০ টাকা। তবে আজ বুধবার থেকে সে জমা গিয়ে দাঁড়াবে ১৫০ টাকায়। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার রিকশার গ্যারেজ মালিক এবং ঢাকা মহানগরী রিকশা ও ভ্যানচালক কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি মো. শহিদ এ তথ্য গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। এই সিদ্ধান্ত ঢাকা মহানগরী রিকশা ও ভ্যানচালক কল্যাণ সমিতির। একত্রিশ বছর ধরে রিকশা চালান মো. রনজু মিয়া। তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন শুরুতে রিকশার জন্য সারা দিনে মালিককে দিতে হতো ৮ টাকা। বছর বছর সেই ‘জমা’ বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে আয়ও। তবে গত কয়েক বছরে আয় সেভাবে না বাড়লেও রিকশার জমা তরতর করে বেড়েছে। বাড়তি এই ত্রিশ টাকা কোথা থেকে আসবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রনজু মিয়া। তার মতে, নগরীতে এখন রিকশার যাত্রী কম। সৌখিন রিকশা যাত্রীও কমে গেছে। ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপকালে এই রিকশাচালক বলেন, দরকার না হইলে কেউ এখন আর রিকশায় ওঠে না। যারা ওঠে তারাও ৩০ টাকা ভাড়া ২০ টাকা কয়। জমাবৃদ্ধির ৩০ টাকাই বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করেন রিকশাচালক মো. রতন। তিনি বলেন, এই ৩০ টাকা এখন পকেট থেকে যাইবো। যাত্রী বাড়তি ভাড়া দিতে চায় না। নগরীর কয়েকটি রিকশার গ্যারেজ ঘুরে রিকশার জমাবৃদ্ধির সত্যতা মিলেছে। দুই যুগ ধরে রিকশার ব্যবসা করা আনিসুর রহমান জানান, নতুন জমা ১৫০ টাকা আগামীকাল থেকে কার্যকর হচ্ছে। রাজধানীর গাবতলী এলাকার এই রিকশার গ্যারেজ মালিক গণমাধ্যমকে রিকশার জমাবৃদ্ধির কারণ জানান। তার ভাষ্যমতে, গত কয়েক মাস ধরে রিকশায় ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসের দাম বেড়েছে। ফলে রিকশার জমা বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন তারা। রিকশায় ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসের এক মাসের আগের দামের সঙ্গে বর্তমান দামের তুলনা করে আনিসুর রহমান জানান, টিউব আগে ছিল ৪০ টাকা, এখন ৬৫ টাকা। রেকসেল আগে ছিল ৩৭০ টাকা, এখন ৫৫০ টাকা। বেল মেশিন আগে ছিল ৩৫ টাকা, এখন ৬৫ টাকা। প্যাডেল রাবার আগে ছিল ১০ টাকা, এখন ২০ টাকা। সিটকভার ২০ টাকা থেকে ৪০ টাকা। চেইন ২২০ টাকা থেকে ৩৩০ টাকা। গিয়ার ২২০ টাকা থেকে ৩৩০ টাকা। স্পট ১৬ টাজা ডজন থেকে ৩০ টাকা। টায়ার ৪১০ টাকা থেকে ৫৩০ টাকা। রিকশার হুড তৈরিতে আগে ১৬০০ টাকা খরচ হতো। যা এখন ২৮০০ টাকায় পৌঁছেছে। তিনি জানান, ছয় মাস আগেও একটা রিকশা তৈরিতে খরচ হতো ১৮ থেকে ১৯ হাজার টাকা। বর্তমানে সেই রিকশা তৈরির খরচ প্রায় ২৫ হাজার টাকা। রিকশার জমাবৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, এই জমাটা আগেই বাড়ানো উচিত ছিল। অনেক গ্যারেজ মালিক লসে আছে। মালামালের দাম বেশি, মিস্ত্রির বেতন বেশি। কিন্তু ১২০ টাকা জমা! এই জমা দিয়ে চলে না।