২৫ মার্চের গণহত্যার বিচারে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় দরকার
বললেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ
প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
একাত্তরের ২৫ মার্চের গণহত্যার বিচার করতে শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দরকার বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। গতকাল শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে ’৭১-এর ২৫ মার্চ গণহত্যার প্রতিবাদে’ বাংলাদেশ সচেতন নাগরিক কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। মন্ত্রী বলেন, ’৭১-এর ২৫ মার্চের গণহত্যার বিচার যদি চাইতে হয়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যদি চাইতে হয় এবং তাদের বিনাশ করতে হয় তাহলে রাষ্ট্র ক্ষমতায় স্বাধীনতাবিরোধীরা যেন ভুলেও না আসতে পারে। সে জায়গায় আমাদের ঐক্যের ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তা থাকতে হবে। শেখ হাসিনা ছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দুঃসাহস অনেকেই করত না। শেখ হাসিনা আমাদের জন্য আশীর্বাদ। শেখ হাসিনা না থাকলে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হতো না, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতো না, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত হতো না, মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাণসঞ্চারী স্লোগান জয় বাংলা রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন মাধ্যমে সবাই বলত না।’ রেজাউল করিম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তিকে আবার পরাজিত করতে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় দরকার। ত্রিশ লক্ষ শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দরকার। তিনি ছাড়া দুঃসাহসী কান্ডারি আর দ্বিতীয় কেউ আসবে না।’
২৫ মার্চের গণহত্যার বিচারে সরকার পর্যায়ক্রমে চেষ্টা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২৫ মার্চের গণহত্যার বিচারের জন্য প্রত্যেকের সচেতনতাবোধ জাগ্রত করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে সচেতন করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বের বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পরের বাংলাদেশ, যুদ্ধাপরাধের সময়ের ঘটনা নতুন প্রজন্মকে বোঝাতে হবে। প্রধান অতিথি আরো যোগ করেন, আমাদের অস্তিত্বের উৎসমূলে ফিরে যেতে হলে একাত্তরের ২৫ মার্চের গণহত্যার কথা ভুলে যাওয়া যাবে না। ভুলে যাওয়া যাবে না আমাদের ওপর নির্বিচারে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ঝাঁপিয়ে পড়ার বর্বরোচিত ঘটনার কথা। এটাও ভুলে যাওয়া যাবে না ১৯৭১ সালে দেশের একটি পক্ষ স্বাধীনতা চেয়েছে, আরেকটি পক্ষ চায়নি। পৃথিবীর কোনো দেশে পরাজিত শক্তি ফিরে দাঁড়াতে পারেনি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশেই স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছে। দেশে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ২৬ বছর স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি রাষ্ট্র শাসন করেছে। এই ২৬ বছরে তারা ডালপালা, ফুলে-ফলে সুশোভিত হয়েছে। অর্থনীতি, প্রশাসন, রাজনীতিসহ দেশের সর্বত্র স্বাধীনতাবিরোধী ও তাদের উত্তর প্রজন্ম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছে তারা এ প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। শ ম রেজাউল করিম বলেন, আওয়ামী লীগের বাইরে যারা ২৬ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল, তাদের মধ্যে পাকিস্তানি ভাবধারা ও চিন্তা-চেতনার কুশীলবরা ছিল বলেই ২৫ মার্চের গণহত্যার বিচার করা যায়নি। এখনো আমরা শত্রুমুক্ত নই, স্বাধীনতাবিরোধী মুক্ত নই। তা না হলে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে ১৯ বার মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হতো না।
বাংলাদেশ সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি ও সাবেক রাষ্ট্রদূত অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে অংশগ্রহণ করেন মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব.), বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ জলিল, অধ্যাপক ফজলে আলী প্রমুখ।