ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সতর্ক করে চোর ধরতে গেল ভোক্তা অধিকার

সতর্ক করে চোর ধরতে গেল ভোক্তা অধিকার

রাজধানীর নিউমার্কেট কাঁচাবাজারে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় অভিযান পরিচালনা করার কথা ছিল জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারের। সেই মোতাবেক সাড়ে ১০টায় সেখানে পৌঁছায় অধিদপ্তরের একটি দল। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে মার্কেটের মাইকে ঘোষণা শোনা যায়, ‘পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষ্যে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম চলছে। তাই আপনার দোকানে পণ্যের মূল্যতালিকা যথাস্থানে সংরক্ষণ করুন।’ পরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান শুরু হয় বেলা ১১টা ১০ মিনিটের দিকে। এরই মধ্যে সতর্ক হয়ে যান মার্কেটে থাকা দোকানিরা। উপস্থিত সাংবাদিকসহ অনেকে বলেছেন- এটা তো সতর্ক করে চোর ধরতে যাওয়ার মতো অবস্থা হলো! অভিযানের শুরুতে তিনটি সবজির দোকান ঘুরে একটি দোকানে বেগুনের দাম ১০ টাকা বেশি রাখার দায়ে দোকানিকে ১ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করে তা আদায় করা হয়। বাজারের আরো কিছু দোকান ঘুরে দেখে ভোক্তা অধিকারের দল। সবশেষে মুরগির বাজারে গিয়ে তারা দেখতে পান, ব্রয়লার মুরগির দাম ২৫০ টাকা কেজি রাখা হচ্ছে। পরে সেই দোকানের ক্রয় রশিদ দেখে হিসাব-নিকাশ করে দোকানিকে সতর্ক করে দেন এবং বলে দেন ক্রয় মূল্যের চেয়ে ১০ টাকার বেশি লাভে বিক্রয় করা যাবে না। পরে দোকানের বোর্ডে ২৫০ টাকার পরিবর্তে ২৪৫ টাকা লিখে দেয়া হয়।

ওই দোকানি মোহাম্মদ মোক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ক্রয়মূল্যের চেয়ে ১৫ থেকে ২০ টাকা লাভ করে থাকি। আজ আমাদের কাপ্তান বাজার থেকে মুরগি কেনার রেট ছিল ২৩৫ টাকা। আমরা ২৫০ টাকায় বিক্রি করছি। ভোক্তা অধিকার সেটি ২৪৫ টাকা করে দিয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ১০০ মুরগি কিনলে দোকানে আনতে আনতে তিন থেকে চারটি মুরগি মারা যায়। সেগুলো তো আমাদের পোষাতে হয়। আমরা তাও কেজিপ্রতি ১৫ টাকা লাভে ২৫০ টাকা বিক্রি করছি। কিন্তু অন্যরা যে ২৩৫ টাকার মুরগি ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায় বিক্রি করেন, সেটা তারা দেখেন না।

অভিযান শেষ করে মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগেই বলে রেখেছেন আমাদের জন্য ২০২৩ সালটা ক্রান্তিকাল। বিশ্ব বাজারের পরিপ্রেক্ষিতে সময়টা আমাদের দেশের গরিব-মেহনতি মানুষের পার করতে অনেক কষ্টকর হবে। বিশেষ করে খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে। রমজান মাসকে নিয়ে আমরা আমাদের খাদ্য মনিটরিং কার্যক্রম চালাচ্ছি।। আগে থেকেই স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। আমরা চেষ্টা করেছি যেন বাজারে সরবরাহ ঠিক থাকে। তিনি বলেন, আমরা সাধারণত দুইভাবে বাজার করে থাকি। একটি হচ্ছে সবজি বাজার, আরেকটি হচ্ছে মুদি দোকানের বাজার। আমরা আজ নিউমার্কেটে যেটা দেখলাম, বেগুন পাইকারি ৪০ টাকা হিসেবে বিক্রি হচ্ছিল গতকাল কারওয়ান বাজারে। সেই বেগুন এখানে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দোকানি আমাদের বললেন, তিনি ৬৫ টাকায় কিনে এনেছেন। কিন্তু আমরা যখন রশিদ চাইলাম, তখন সেটি তিনি দেখাতে পারলেন না। এ বাজারে আমরা দেখলাম ২৫০ টাকা ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করা হচ্ছে। বিক্রেতার কাপ্তান বাজারের ক্রয় রশিদ হিসাবে দেখলাম ২৫০ টাকা থেকে আরো ৫ টাকা কমে বিক্রি করতে হবে। আমাদের কনভেনর মহোদয় সেটি ২৪৫ টাকা করে দিয়েছেন।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আভিযানিক দলে আরো ছিলেন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান আব্দুল জব্বার মণ্ডল, অধিদপ্তরের অভিযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান প্রমুখ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত