কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রজ্বলিত-৩৫ ব্যাচের ‘অবতরণিকা উৎসব’ ঘিরে তিন শিক্ষার্থীর ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের ব্যাপারে উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। হামলার ঘটনায় ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও দায়সারা তদন্ত কমিটি ছাড়া অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে শাস্তির আওতায় আনতে পারেনি প্রক্টরিয়াল বডি। এমনটাই অভিযোগ করেছেন অতর্কিত হামলায় আহত ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। গত বৃহস্পতিবার এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বিশ্ববিদ্যালয় সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুর্শিদ আলমকে আহবায়ক করে তিন তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটি গঠনের পরপরই তদন্ত কমিটিতে থাকবেন না বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মুর্শেদ আলম। তদন্ত কমিটি গঠনের সপ্তাহখানেক পেরিয়ে যাওয়ার পর গত ২৫ মার্চ তিনি জানান তদন্ত কাজ এখন শুরু করা যাবেনা ঈদের পরে অথবা প্রক্টর মিটিং করলে তদন্ত কাজ শুরু হবে। এ তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটিতে সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড মুর্শেদ আলমকে আহ্বায়ক ও সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা তোফাজ্জেল হোসেনকে সদস্য সচিব করা হয়। এছাড়া কমিটির অপর সদস্য হলেন সহকারী প্রক্টর সাজ্জাদুর রহমান টিটু। কমিটির সদস্যদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ।
তদন্ত কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও তদন্ত কমিটির আহবায়ক মুর্শীদ আলম বলেন, ‘তদন্ত কমিটির কার্যক্রম ঈদের ছুটির পরে শুরু হবে। আপাতত এর বেশি কিছু জানিনা। এছাড়া আমাদেরকে নিয়ে প্রক্টরের মিটিং করার কথা রয়েছে। মিটিংয়ে বসলে পরবর্তী আপডেট জানব। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না, তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। ওরা ইনডিভিজুয়ালি কাজ করতেছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা কাজ শেষে বিস্তারিত জানাবেন।’ তদন্ত কমিটির আহবায়কের দায়সারা বক্তব্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, ‘ আমি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। সুষ্ঠু তদন্ত শেষে দ্রুত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এমনটি হওয়ার কথা না।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা মিলে বাংলা মঞ্চে অবতরণিকা উৎসব পালন করে। এ সময় টি-শার্ট বিতরণকে কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা বিভাগের তাসিন ইসলাম রাহিন, রাব্বি ফকির এবং ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মোবারক হোসেন আশিকসহ মার্কেটিং বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী ও প্রতিদিনের বাংলাদেশের প্রতিনিধি রানা আহমেদ অভি, মুশফিকুর রহমান এবং সাব্বির শাওনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিযুক্তরাও প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর অভিযোগ দেন।