ঢাকা ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভোগান্তিতে রোজাদার শিক্ষার্থী

ইবিতে রমজানে খাবারের দাম বেড়েছে, মান বাড়েনি

ইবিতে রমজানে খাবারের দাম বেড়েছে, মান বাড়েনি

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) পবিত্র সিয়াম সাধনার মাস মাহে রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে ৪০ দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে কোনো বিভাগ চাইলেই পরীক্ষা নিতে পারবে এমন নির্দেশনা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সে কারণে অনেকগুলো বিভাগের পরীক্ষা চলমান থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও খোলা থাকছে আবাসিক হলগুলো। কয়েকটি বিভাগে পরীক্ষা ও টিউশনির কারণে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী রমজানে আবাসিক হলগুলোতে থেকে গেছেন। সেই হিসেবে এবার ক্যাম্পাসের হলগুলোতে তুলনামূলক বেশি শিক্ষার্থী অবস্থান করছে। তবে এখন বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষার্থীদের মানসম্মত সাহরির খাবার নিয়ে। অন্য মাসগুলোতে হলে খাবার নিয়ে নানা অভিযোগ থাকলেও সবার আশা ছিল রমজান মাস উপলক্ষ্যে তারা ভালো মানের খাবার পাবে। অথচ একদিক দিয়ে খাবারের দাম বাড়ালেও অন্যদিকে বাড়েনি খাবারের মান।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে দেখা যায় রাতের খাবারের মূল্য আগের মতো থাকলেও সাহরিতে রাতের একই খাবার পরিবেশন করা হয়। তবে রাতের তুলনায় সাহরি খাবারে যোগ হয় অতিরিক্ত পাঁচ-দশ টাকা। এতে করে সাধারণ শিক্ষার্থীর ভোগান্তি বাড়ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে বাড়তি টাকা দিয়ে ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়ের দোকানগুলোতে খাবার খাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলে খাবারের নিয়মিত দামের চেয়েও ১২ টাকা বৃদ্ধি করে ৫০ টাকা দামে সাহরি বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু দাম বাড়লেও ন্যূনতম মান বাড়েনি খাবারের।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আশরাফ উদ্দীন বলেন, ‘৩৮ টাকার খাবার ৫০ টাকায় বিক্রি করা হলেও ন্যূনতম গুণগত মান বাড়েনি। এই খাবারে সাহরি খেয়ে সারাদিন রোজা থাকা দায়।’ সরেজমিন সাদ্দাম হলে গিয়ে দেখা যায়, সাদ্দাম হলে ২৮ টাকার খাবারের দাম বাড়িয়ে ৪০ টাকা। ৩৮ টাকার খাবারের দাম বাড়িয়ে ৬০ টাকা করা হয়েছে। কিন্তু খাবারের ন্যূনতম দাম বাড়েনি।

সাদ্দাম হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মোতালেব বিশ্বাস বলেন, ‘আগের মাসের তুলনায় রমজানে হলের খাবারের দাম বৃদ্ধি করলেও খাবারের মান আহামরি বাড়েনি। এতে করে আমরা আগের তুলনায় বাড়তি মূল্য দিলেও পাচ্ছি না মানসম্মত সাহরি।’ সাহরি খাওয়ার সময়ে হলগুলোতে লক্ষ্য করলে দেখা যায় ভালো খাবারের সন্ধানে এক হল থেকে আরেক হলের দিকে ছোটাছুটি করতে থাকে শিক্ষার্থীরা। দেখা যায় আবাসিক সাদ্দাম হোসেন হলের শিক্ষার্থীরা যাচ্ছে লালন শাহ হলের দিকে আবার শহীদ জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থীরা যাচ্ছে সাদ্দাম হোসেন হলে। এভাবে শিক্ষার্থীরা ভালো খাবারের খোঁজে হল পরিবর্তন করে খুঁজছে মানসম্মত সাহরির খাবার। তবে কিছু হলে খাবারের মান কিছুটা ভালো হলেও সেটা বিক্রি হচ্ছে আলাদাভাবে চড়া দামে। যা সত্তর টাকা থেকে নব্বই টাকার মধ্যে। যা সাধারণ দামের তুলনায় অনেক বেশি।

শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মাজিদুল ইসলাম উজ্জ্বল বলেন, জিয়া হলে কয়দিন থেকে খাচ্ছি খাবারের মান ভালো না হওয়াতে লালন শাহ হলে যাচ্ছি। তবে ওখানেও খেয়ে মজা পাচ্ছি না সেভাবে। বাড়তি টাকা লাগলেও মনের মতো খাবার পাচ্ছি না। তাই নিজ হল রেখে অন্য হল ও দোকানগুলোতে ছুটতে হচ্ছে ভালো খাবারের খোঁজে।

মেয়েদের হলেও একই অবস্থা। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নুসরাত রাসা বলেন, রমজানে বাড়ি যাব ভেবেছিলাম। কিন্তু ক্লাস-পরীক্ষা থাকার কারণে যেতে পারছি না। হলে অন্য কোনো সমস্যা নেই। তবে এখন প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে হলের সাহরি খেয়ে রোজা রাখা। ডাইনিংয়ে খুব বাজে খাবার দেয়া হচ্ছে। খাবারের দামের বিষয়ে শেখ রাসেল হলের ডাইনিং ম্যানেজার বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে আমরাও দাম বাড়াতে বাধ্য। অন্য মাসের তুলনায় রমজানে খাবারের মান ভালো করা হয়েছে। এজন্যই দাম একটু বৃদ্ধি পেয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত