ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে পরীক্ষা ও প্রেজেন্টেশন চলাকালে প্রত্যেক ছাত্রীর কান-মুখ খোলা রাখার নোটিশের কার্যকারিতা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্রীদের কান-মুখ খোলা রাখতে বাধ্য করা যাবে না বলে জানিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক ছাত্রীর কান-মুখ খোলা রাখার নোটিশটি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তাও জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। এ-সংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. ফয়জুল্লাহ ফয়েজ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। তারা বলেন, শুনানিতে হাইকোর্ট বলেন, প্রত্যেক মানুষের নিজ নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা রয়েছে। এটাই আমাদের সংবিধানের স্পিরিট। কাউকে কান-মুখ খোলা রাখতে বাধ্য করা যাবে না। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে পরীক্ষা ও প্রেজেন্টেশন চলাকালে প্রত্যেক ছাত্রীর কান-মুখ খোলা রাখার নোটিশের বৈধতা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের একটি আইন নোটিশ দেয়া হয়। তবে সে নোটিশের জবাব না পেয়ে ঢাবি কর্তৃপক্ষের নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়।
ভুক্তভোগী তিন শিক্ষার্থীর পক্ষে আইনজীবী মো. ফয়জুল্লাহ ফয়েজ এ রিট করেন। রিট আবেদনে ঢাবি ভিসি, বাংলা বিভাগের প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়। প্রসঙ্গত, গত ১১ ডিসেম্বর বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. আজিজুল হকের সই করা নোটিশে বলা হয়, ‘বাংলা বিভাগের সব শিক্ষার্থীকে জানানো যাচ্ছে যে, ১৮/৯/২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত বাংলা বিভাগের একাডেমিক কমিটি সর্বসম্মতভাবে নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী বাংলা বিভাগের প্রতি ব্যাচের সংযোগ ক্লাস (টিউটরিয়াল প্রেজেন্টেশন), মিডটার্ম পরীক্ষা, চূড়ান্ত পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীকে পরিচয় শনাক্ত করার জন্য কানসহ মুখমণ্ডল পরীক্ষা চলাকালীন দৃশ্যমান রাখতে হবে।’ এই সিদ্ধান্ত প্রতিটি ক্লাসে শিক্ষকরা এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের অবহিত করেছেন। কিন্তু লক্ষ করা যাচ্ছে যে, কোনো কোনো শিক্ষার্থী এই সিদ্ধান্ত পালনে শৈথিল্য দেখাচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ৬/১২/২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভায় সর্বসম্মতিতে নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় : ‘১৮/৯/২০২২ তারিখে গৃহীত উপরোক্ত সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে যারা পালন করবে না, তাদের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’