সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নয়, মামলা অন্যায়ের বিরুদ্ধে : আইনমন্ত্রী
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর রমনা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় দৈনিক প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সাভারে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে, সেটি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নয়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি তার দপ্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক করেন। আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন।
আনিসুল হক বলেন, যে মামলা হয়েছে বা হচ্ছে সেটা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নয়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে। আপনারা নির্ভীক সাংবাদিক আমি এটা স্বীকার করি। আপনারা যদি জনগণের জন্য সত্য তথ্য প্রকাশ করেন তাহলে কোনো মতেই এই সরকার সাংবাদিকদের বাধা দেবে না।
আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মামলায় যখন তথ্য দেয়া হবে, তখন যদি প্রাইমাফেসি কেস (প্রাথমিক সত্যতা) না থাকে তখন প্রাইমাফেসি কেস নির্ধারণের জন্য আগে সেলে পাঠানো হবে এবং সেলের পরীক্ষার পর মামলা নেয়া হবে। কিন্তু ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে যে মামলা হয়েছে তার যে বিবরণী, সেটা যদি দেখেন, তাহলে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে যে মামলা হয় সেটার তথ্য-উপাত্ত কিন্তু সেই বিবরণীর মধ্যে ছিল। সেক্ষেত্রে পরীক্ষার জন্য পাঠানোর প্রয়োজন পড়ে না বলে এই মামলা গ্রহণ করা হয়েছে।
নওগাঁয় এক নারীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা করার বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, নওগাঁয় যে ভদ্র নারীকে তুলে নেয়া হয়, তখন কিন্তু তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মামলা ছিল না। তার অবশ্যই দুর্ভাগ্য তিনি যখন মারা যান, তখনো ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মামলা ছিল না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে তার পরের দিন। তাহলে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের এখানে অপব্যবহার করা হয়েছে। এই মামলার কোনো প্রসিকিউট করা হয়নি। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট দিয়ে নারীকে ধরা হয়নি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে আনিসুল হক আরও বলেন, দু-একটা কেসে (ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের অপব্যবহার) হচ্ছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেখানেই আমরা দেখছি যে, এই আইনের অপব্যবহার হচ্ছে সেখানেই তা বন্ধ করার জন্য যে ব্যবস্থা নেয়ার সেটা নিচ্ছি।
প্রসঙ্গত, সুলতানা জেসমিন (৪৫) নওগাঁ সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন। ২২ মার্চ নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় থেকে তাকে আটক করা হয়। ২৪ মার্চ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। র্যাবের দাবি, প্রতারণার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জেসমিনকে আটক করা হয়। আটকের পর অসুস্থ হয়ে তিনি মারা গেছেন। তবে স্বজনদের অভিযোগ, হেফাজতে নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।