কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ে উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা নিশ্চিতের দাবি

প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপজনিত বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের প্রকোপ ও মৃত্যু ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। বিশেষ করে শহুরে রোগ বলে খ্যাত অসংক্রামক রোগগুলো গ্রামাঞ্চলেও আশঙ্কাজনক অবস্থায় পৌঁছেছে। এক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ে উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থা কার্যকরী ও ব্যয়-সাশ্রয়ী পদক্ষেপ হিসেবে ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা। গতকাল বৃহস্পতিবার অ্যাডভোকেসি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত ‘উচ্চ রক্তচাপজনিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব তথ্য তুলে ধরেন। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেছে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)। এবছর বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’।

ওয়েবিনারে দাবি করা হয়, বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজন প্রাপ্ত বয়স্কের মধ্যে একজনের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিতের মাধ্যমে দেশের জনগোষ্ঠীকে উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। ওয়েবিনারে কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ সাপোর্ট ট্রাস্টের সহ-সভাপতি ডা. মাখদুমা নার্গিস বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি রয়েছে। কমিউনিটি বেজড হেলথ কেয়ারের (সিবিএইচসি) আওতাধীন বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামত নিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধের তালিকায় উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব। তবে কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রশিক্ষিত লোকবল নিশ্চিত ও তাদের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এসএম মোস্তফা জামান জানান, সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপার ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে হবে ও রোগীদের ওষুধের পাশাপাশি মোটিভেশন দিতে হবে। একইসঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান উদ্যোগগুলো সমন্বিতভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে এই সংকট থেকে দ্রুত উত্তরণ সম্ভব হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বৈশ্বিক জনসংখ্যার ৩০ ভাগই প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পায় না। এছাড়া প্রায় ২০০ কোটি মানুষ ভয়াবহ স্বাস্থ্য ব্যয়ের মুখোমুখি হয়। তবে তথ্য-উপাত্ত বলছে, এক্ষেত্রে প্রাইমারি হেলথ কেয়ারভিত্তিক (পিএইচসি) স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা সবচেয়ে কার্যকরী ও ব্যয়-সাশ্রয়ী পদক্ষেপ হিসেবে ভূমিকা পালন করতে পারে। ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের হাইপারটেনশন কন্ট্রোল প্রোগ্রামের ম্যানেজার ডা. শামীম জুবায়ের ও প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রজ্ঞার কো-অর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই ওয়েবিনারে অংশ নেন।