রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। তবে এই জিডি করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন অনেকেই। গতকাল শুক্রবার বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুড়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস, হারানো বা খোয়া যাওয়া দোকানের পণ্য, ব্যাংক লোন, সমিতির লোন অথবা ব্যাংকের চেক বই পুড়ে যাওয়ার বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোলরুমে সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। তবে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও অনেকে জিডি করতে পারছেন না।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু একটা জিডি করতেই অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। আর কতক্ষণ লাগবে জানি না। কিন্তু যত দ্রুত সম্ভব আমাদের জিডিটা দায়ের করতেই হবে। তাই আমরা লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এদিকে পুলিশ জানায়, সার্ভারে ধীরগতি ও ইন্টারনেট সংযোগে বিঘ্ন থাকায় মূলত অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের জিডি লিপিবদ্ধ করতে সময় বেশি লাগছে। এতে আমাদেরও কিছু করার নেই। নেট সংযোগ ঠিকমতো না পাওয়া গেলে জিডি পেন্ডিং থেকে যায়, অ্যাপ নিতে চায় না। মূলত এ কারণেই একটি জিডি দায়ের করতে অধিক সময় লেগে যাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানে বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এবং সরজমিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। বঙ্গবাজার গুলিস্তান ইউনিটের দোকানে মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। তার চারটি দোকান পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি লিপিবদ্ধ করার জন্য পুলিশের অস্থায়ী কন্ট্রোলরুমে এসেছেন। তিনি সেখানে লাইনে দাঁড়িয়ে জিডি করার অপেক্ষায় আছেন।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বঙ্গবাজারে চারটি দোকান একসঙ্গে ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করছিলাম। আমার এই চারটি দোকানের অ্যাডভান্স দেয়া ছিল ১০ লাখ টাকা। এছাড়া বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ঈদ উপলক্ষে দোকানে পণ্য তুলেছিলাম ৩৫ লাখ টাকার। কিন্তু আগুনের ঘটনায় আমার ব্যবসার সমস্ত মূলধন শেষ। এখন একটি কাপড় কিনে গায়ে দেওয়ার মতো অর্থও আমার কাছে নেই। তিনি আরও বলেন, আগুনের ঘটনায় আমার আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লোনের কাগজপত্র, দোকানের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, মালামাল, চেক বই, গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস পুড়ে গেছে। এসব বিষয়ে থানায় অবগত করার জন্য এখানে জিডি করার জন্য এসেছি। কিন্তু দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে এখনো জিডি করতে পারি নাই। জিডি দায়ের করার এই বিড়ম্বনা বা ধীরগতি কেন? জানতে চাইলে ঘটনাস্থলে অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন বসাক বলেন, ইন্টারনেটের সমস্যা ও অ্যাপের ধীরগতির কারণে বিড়ম্বনা সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক ইনফরমেশন দেয়ার পরও ইনফরমেশনটি অ্যাপ নিচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে অনেকক্ষণ পরে অ্যাপ ইনফরমেশনটা নিচ্ছে। সে কারণে সময় ক্ষেপণ হচ্ছে। এছাড়া পর্যাপ্ত নেটওয়ার্ক মিলছে না। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে এ পর্যন্ত কতগুলো জিডি দায়ের করা হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫টি জিডি দায়ের হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সংখ্যাটা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।