আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে একটি চক্র সিলেকশনের মাধ্যমে সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন ও অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখলের পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কতিপয় সাংবাদিক ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কয়েক নেতার নাম ভাঙিয়ে এ খেলায় মেতে উঠেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে নিরাপত্তা চেয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে ওই প্রেসক্লাবের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির পক্ষ থেকে লিখিতভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগের অনুলিপি স্থানীয় এমপি, পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি/সম্পাদকসহ অঙ্গ-সংগঠনের নেতাদের কাছেও পাঠানো হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সভা করতে আসলে আহবায়ক কমিটির নেতৃত্বে সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধি দল বিভাগীয় কমিশনারের সাথে সাক্ষাৎকালে এই লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ অভিযোগ পাওয়ার পর বিভাগীয় কমিশনার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারের দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে প্রেসক্লাবের প্রতিনিধিদের আশ্বাস দেন। এ অভিযোগে বলা হয়েছে, বিগত কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর চলতি বছরের গত ২০ ফেব্রুয়ারি গঠনতন্ত্র মোতাবেক প্রেসক্লাবের সাধারণ সভা ডাকা হয়। ওই সভায় প্রেসক্লাবেব ৪৭ জন সদস্যের মধ্যে ৩৮ জন উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এরপর গত ২৩ মার্চ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করে ৩ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল গঠন করে আহবায়ক কমিটি। নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পেয়ে প্রেসক্লাবের দৃশ্যমান ৪৭ জন সদস্যের নামে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করে নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করে। ঘোষণা অনুযায়ী মনোনয়নপত্র উত্তোলন এবং দাখিলও করেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। এ অবস্থায় প্রেসক্লাবের বিগত কমিটির সভাপতি/সম্পাদক পরিকল্পিতভাবে প্রেসক্লাবের সদস্য নন এমন ৩ জন সাংবাদিককে বাদী বানিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করান এবং প্রেসক্লাবের চলমান নির্বাচন প্রক্রিয়া স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৪ মার্চ বিচারিক আদালত দায়ের হওয়া মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠনের উপর নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। এরপর থেকে নির্বাচনি কার্যক্রম স্থগিত রেখে আহ্বায়ক কমিটি প্রেসক্লাবের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সেই সঙ্গে বিচারিক আদালতের নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করেছেন তারা। আদালত আপিল শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করেছেন ৮ জুন। এ অবস্থায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রেসক্লাবের সদস্যদের একটি বড় অংশকে পাশ কাটিয়ে সিলেকশনের মাধ্যমে কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন এবং অবৈধভাবে সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাব দখলের পাঁয়তারার পাশাপাশি ন্যক্কারজনক এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ওই চক্রটি প্রেসক্লাবের সদস্যদের ডেকে নিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।