ঢাকা ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তামাকবিরোধী জোট

অগ্নিকাণ্ড থেকে রক্ষায় পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ জরুরি

অগ্নিকাণ্ড থেকে রক্ষায় পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ জরুরি

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন মার্কেটে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এসব অগ্নিকাণ্ডে মানুষের জীবন ও সম্পদ ক্ষতির মুখে পড়ছে। অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে এই মুহূর্তেই সবার সতর্ক হওয়া জরুরি। সেই সাথে অগ্নিকাণ্ডে জীবন-সম্পদ রক্ষায় পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ জরুরি বলে মনে করে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট। গতকাল সোমবার সংগঠনটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বঙ্গবাজারে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ড সিগারেট বা কয়েল বলে অনুমান করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় এখনই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। বর্তমানে বাংলাদেশ ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ। কিন্তু এই আইনে ধূমপানের স্থান রাখারও একটি বিধান বিদ্যমান রয়েছে। এই ধারাকে কাজে লাগিয়ে সিগারেট কোম্পানিগুলো সুকৌশলে বিভিন্ন জায়গায় ধূমপানের স্থান তৈরি করছে। মূলত দুটি বহুজাতিক কোম্পানির মদদে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ধূমপানের স্থান তৈরি করা এবং এসব স্থানে যুবকদের ধূমপানে উৎসাহিত করা হচ্ছে। একই সাথে মানুষের জীবন ও সম্পদকে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট বলছে, বর্তমানে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ এর যে আইন সংশোধন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে সেখানে ধূমপানের স্থান রাখার বিধান বাতিল করা জরুরি। সকল মালিক ও মার্কেট কর্তৃপক্ষকে আমরা আহ্বান জানাই তারা যেন তাদের প্রতিষ্ঠানকে ধূমপানমুক্ত রাখে। মাত্র কিছু মানুষের ধূমপানের কারণে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ এবং মানুষের জীবনকে ক্ষতির দিকে ঠেলে দেওয়া কোনোভাবেই যৌক্তিক হতে পারে না। ধূমপানের স্থান নিষিদ্ধ হলে শুধু সম্পদই রক্ষা পাবে না, এতে অধূমপায়ীরাও স্বাস্থ্যগত সুবিধা পাবে। মার্কেট কর্তৃপক্ষ এসব আইনের প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নিজেরাই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন। পাশাপাশি সরকারও ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ধূমপানের স্থান বিধান বাতিলের মাধ্যমে এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যয় অনুসারে ২০৪০ সালের পূর্বে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার আইন, মেট্রোপলিটন আইন, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স আইন অনুসারে সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ধূমপান সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হোক। বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট জনস্বাস্থ্য এবং সম্পদ রক্ষায় সরকারকে এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে। সেই সাথে সব মার্কেট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ২০১৮-২০২২ সাল- গত ৫ বছরে সিগারেট বা বিড়ির ফেলে দেয়া জ্বলন্ত টুকরা থেকে ১৭ হাজার ৯৭৯টি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এর মধ্যে ২০২১ সালে ৩ হাজার ১৯৩টি, যা মোট অগ্নিকাণ্ডের ১৪.৭৮ শতাংশ, যার আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ১৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা। ২০২২ সালে একই কারণে তিন হাজার ৮৭৮টি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতি ৩৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকার অধিক, যা মোট অগ্নিকাণ্ডের ১৬.৮ শতাংশ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত