ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভাড়া নিয়ে নেই কোনো অভিযোগ

স্বস্তির ঈদযাত্রায় ঢাকা ছাড়ছে দক্ষিণের মানুষ

স্বস্তির ঈদযাত্রায় ঢাকা ছাড়ছে দক্ষিণের মানুষ

ঈদুল ফিতরের ছুটিতে রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। ঘাটে যাত্রী চাপ কম থাকায় ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঘরমুখো মানুঘ অনেকটা আরামদায়কভাবেই বাড়ি ফিরছেন। স্বল্প দূরত্বের জেলাগুলোতে যাত্রী পৌঁছে দিতে লঞ্চগুলো নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই ছেড়ে যাচ্ছে।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে সরকারি ছুটির প্রথম দিন গতকাল সকাল থেকেই সদরঘাট নৌপথে ঢাকা ছেড়েছেন অসংখ্য ঘরমুখো মানুষ। সকাল থেকে প্রায় অর্ধশতাধিক ছোট বড় লঞ্চে দক্ষিণাঞ্চল পাড়ি দেয় হাজার হাজার যাত্রী। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে যেতে থাকে সদরঘাটের চিত্র। প্রচন্ড গরমে দুপুরের দিকে কমে যায় যাত্রীর চাপ। তবে স্বস্তি নিয়ে ঈদযাত্রা করছেন অসংখ্য ঘরমুখো মানুষ।

গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সদরঘাট থেকে চাঁদপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, ঝালকাঠিগামী লঞ্চগুলো ছেড়ে গেছে। এসময় স্বস্তি নিয়ে ঈদযাত্রা করেন অসংখ্য ঘরমুখো মানুষ। যাত্রী চাপ থাকলেও ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি, সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় অনেককে টিকিট কাটতে দেখা যায়।

দেখা যায়, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঢাকা-বরিশাল-কাউখালী-তুষখালীগামী লঞ্চের সামনে যাত্রীর জন্য হ্যান্ড মাইক দিয়ে হাঁকডাক করে যাত্রীদের আকর্ষণ করছেন লঞ্চের সুপারভাইজার নাজিম উদ্দিন।

তিনি জানান, লঞ্চ বিকালে ছাড়বে। কেবিন প্রায় অধিকাংশই বুকিং হয়ে গেছে। এখন ডেকের যাত্রী আসছে, টিকিট বিক্রি করছি। এখন যাত্রীদের দেখা না গেলেও বিকালে ভিড় বাড়বে।

চাঁদপুর রুটের লঞ্চ এমভি আসা যাওয়া ২ এর স্টাফ শফিকুল ইসলাম বলেন, রাতে চাঁদপুরের যাত্রী অনেক চাপ ছিল। ১২টার পর লঞ্চ আসছিল আর যাত্রী নিয়ে চলে যাচ্ছিল। আজ (গতকাল) সকালেও যাত্রীর চাপ ছিল, দুপুর হয়ে এখন সেই চাপ নেই। টুকটাক যাত্রী আসছেন। বিকালে আবার চাপ বাড়বে।

ঘাটে কথা হয় ভোলা বোরহানউদ্দিনের যাত্রী মো. রাজ্জাকের সঙ্গে। তিনি বলেন, পরিবারের ঈদ উদযাপনে বাড়ি যাচ্ছি। ভেবে ছিলাম লঞ্চে ভিড় হবে। তবে সদরঘাটে সেই ভিড় নেই। ভালোই লাগছে। আশাকরি স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি যেতে পারব।

ঢাকা-খেপুপাড়া রুটে চলাচলকারী লঞ্চ এমভি জাহিদ-৪ এর ডেক প্রায় যাত্রীপূর্ণ ছিল। এ লঞ্চের যাত্রী শাহীন মিয়া বলেন, ‘আমি যাব মুন্সীগঞ্জ। ভোরেই চলে আসছি। গরমে পরে অতিষ্ঠ হয়ে যাব। এজন্যই আগে আগে বাড়ি ফেরা।

বরগুনাগামী এম ভি পূবালী-১ লঞ্চে পরিবারসহ বাড়ি যাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবী রাতুল হাসান। তিনি জানান, সদরঘাটে যাত্রী না থাকলেও ঈদের সময় চাপ থাকবে। সেই চিন্তায় সকালে বেরিয়ে পড়েছি। রাতের যাত্রা আরামদায়ক হলেও রমজানে সবার সমস্যা হয়ে যায়। এখানে কেবিন পেয়েছি, ভাড়াও ঠিক আছে। বেশ আরামেই বাড়ি পৌঁছাতে পারব আশা করছি।

এ বছর ঈদে যাত্রী সংখ্যা কম হওয়ার আশঙ্কায় দক্ষিণাঞ্চলের ৪১টি রুটে গত বছরের চেয়ে ২২টি লঞ্চ কম চলাচল করবে। তবে ইতিমধ্যে সদরঘাট টার্মিনালে এসে অগ্রিম টিকিট না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন নৌপথের অনেক যাত্রী।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল যাত্রী পরিবহণ সংস্থার মহাসচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী জানান, আমাদের লঞ্চ প্রস্তুত রয়েছে। ঈদ যাত্রায় এবার কোনো ভাড়া বাড়ানো হবে না। আর যাত্রী চাহিদা অনুযায়ী বিশেষ লঞ্চ চালু হবে। এসব লঞ্চের কেবিন বুকিং ও ডেকের টিকিট ঘাটে এসেই নিতে পারবেন।

বিআইডব্লিউটিএ সদরঘাটের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. কবীর হোসেন বলেন, পূর্বে সদরঘাট থেকে ২০০টি লঞ্চ ছেড়ে যেত, এখন চলাচল করে মাত্র ৪৬টি লঞ্চ। এবার ভাড়া বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই, এমন অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিব। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত চাঁদপুরসহ স্বল্প দূরত্বের জেলাগুলোতে ৪০টিরও অধিক লঞ্চ ঘাট ছেড়ে গেছে।

এদিকে ঈদ যাত্রায় যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঘাটে নৌপুলিশের টহল দেখা যায়। সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান খান জানান, ‘আমরা নিয়মিত টহল দিচ্ছি। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেদিকে আমরা খেয়াল রাখছি। যাত্রীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে আমরা প্রস্তুত আছি।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত