ন্যূনতম ২৩ হাজার টাকা মজুরি দাবি

ন্যূনতম ২৩ হাজার টাকা মজুরির দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশন। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে এ দাবি জানায় সংগঠনটি। সংগঠনের সভাপতি নাজমা আক্তার বলেছেন, অর্থনীতির চাকা সচল রাখার ক্ষেত্রে শ্রমিকদের সক্রিয় ভূমিকা আছে। পোশাক শিল্প বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ রপ্তানিমুখী শিল্প। কিন্তু, বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকরা অত্যন্ত নিম্ন মজুরিতে শ্রম দিচ্ছে। বর্তমানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে তাদের জীবনযাত্রার মান একেবারেই নিম্নমুখী। বাংলাদেশে শ্রম আইনের সঠিক বাস্তবায়ন না থাকায় শ্রমিকদের অধিকার প্রায়ক্ষেত্রেই লঙ্ঘিত হচ্ছে। বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়েই চলেছে। এ কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকরা। এই শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি জানাচ্ছি। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণার তথ্য উল্লেখ করে নাজমা আক্তার বলেন, সিপিডির গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার কেন্দ্রস্থলে বসবাসরত একজন ব্যক্তির মাসিক খাবার খরচ ৫ হাজার ৩৩৯ টাকা। চারজনের একটি পরিবারের ক্ষেত্রে এই খরচ হচ্ছে ২১ হাজার ৩৫৮ টাকা। যদি কোনো পরিবার পুরো মাসে একবারও মাছ, গরুর মাংস, খাসির মাংস ও মুরগি না খায়, তাহলেও খরচ ৮ হাজার ১০৬ টাকা। এ খরচের সঙ্গে এক কক্ষের ঘর ভাড়া, গ্যাস-বিদ্যুতের বিল, চিকিৎসা ব্যয়, স্বাস্থ্য সুরক্ষার পণ্য ক্রয়, সন্তানের পড়ালেখার খরচ, যাতায়াত, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের বিল আছে। গণপরিবহনের ভাড়াও বেড়েছে। ফলে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে পোশাক শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি কমে যাচ্ছে। তাতে বর্তমান মজুরিতে শ্রমিকদের জীবনযাপন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। মজুরি কম হওয়ায় তারা পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে পারছে না। ফলে, পুষ্টিহীনতায় ভুগে বয়স হওয়ার আগেই কাজ ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। এতে শ্রমিকরা পরিবার, সমাজ ও দেশের বোঝা হয়ে যাচ্ছে। এর নেতিবাচক প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে পড়ছে। সমাবেশে সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উর্মি আক্তার, প্রচার সম্পাদক ইয়াহিয়া খান, হোপলোন এ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হালিমা বেগম, আরএমজি ওয়ার্কার্স ফোরামের চেয়ারম্যান লিলি বেগম, ফাউন্টেন গার্মেন্টস ম্যানুফেকচারিং কোম্পানি লিমিটেডের শ্রমিক ইউনিয়নের জলি আক্তার, ন্যাচারাল ডেনিমস লিমিটেডের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজমা আক্তারসহ সম্মিলিত শ্রমিক ফেডারেশনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।