ময়মনসিংহে কমিউনিটিভিত্তিক প্রসব-পরবর্তী পরিবার পরিকল্পনাবিষয়ক কর্মশালা

প্রকাশ : ০৯ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ময়মনসিংহ ব্যুরো

অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভ ধারণ রোধকল্পে ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমে অপূরণীয় চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ময়মনসিংহে প্রসব-পরবর্তী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতিবিষয়ক অবহিতকরণ বিভাগীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত শনিবার বেলা ১১টার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল হলরুমে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। পরিবার পরিকল্পনা ময়মনসিংহ বিভাগীয় পরিচালক মো. আ. আউয়ালের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. মো আব্দুল কুদ্দুস। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান আলোচক ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনা ও শেরপুর জেলার উপ-পরিচালক কাজী মাহফুজুল করিম, নিরঞ্জন বন্ধু দাম, রায়হানুল ইসলাম। এছাড়া সব জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর ও প্রোজেক্ট ডিরেক্টর, সুখী জীবনের মাহবুব উল আলম, টেকনিক্যাল ডিরেক্টর ডা. শারমিন সুলতানা, রিজিওনাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার এটিএম রফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। প্রকল্পের ফ্যামিলি প্ল্যানিং কমপ্ল্যায়েন্স কোঅরডিনেটর ডা. জাকিয়া রেজওয়ানার উপস্থাপনায় এই কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনাল কান্ট্রি ডিরেক্টর মাহবুব উল আলম, তিনি এই প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, সুখী জীবন প্রকল্পটি কীভাবে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে বিভাগীয় পর্যায় পর্যন্ত সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সঙ্গে একযোগে মা ও শিশু স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে আসছে তার সফলতা তুলে ধরেন ও এই কার্যক্রমে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সুখী জীবন প্রকল্প রিজিওনাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার এটিএম রফিকুল ইসলাম এই অংশিদার অবহিতকরণ কর্মশালার উদ্দেশ্য সবার সঙ্গে ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি প্রকল্পের কার্যক্রমের ফলে প্রসব-পরবর্তী পরিবার পরিকল্পনা সেবায় যে পরিবর্তন সংঘঠিত হয়েছে তা তথ্যউপাত্তের ভিত্তিতে উপস্থাপন করেন। ডা. জাকিয়া রেজওয়ানা, ফ্যামিলি প্ল্যানিং কমপ্ল্যায়েন্স কোঅরডিনেটর সভায় প্রকল্পের কার্যক্রমের অবকাঠামো ও বিপ্লব কুমার সাহা, মনিটরিং ও ইভালুয়েশন কোঅরডিনেটর তথ্যউপাত্তের বিশ্লেষণ করেন।

ডা. জাকিয়া রেজওয়ানার উপস্থাপনায় এই কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনাব মাহবুব উল আলম, কান্ট্রি ডিরেক্টর, পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনাল। তথ্যউপাত্তের বিশ্লেষণে দেখা যায় ইউএসএআইডি সুখী জীবন প্রকল্প কার্যক্রমের ফলে ময়মনসিংহ বিভাগের কর্মরত এলাকায় ২০২০ সাল থেকে গর্ভবতী মায়েদের রেজিস্ট্রেশনের হার বেড়েছে ১৪ শতাংশ যেখানে নন কর্মরত এলাকায় বেড়েছে ২ শতাংশ এবং বাড়িতে প্রসবের হার কমেছে অন্তত ১১ শতাংশ। সেই সঙ্গে, সেবাকেন্দ্রে প্রসবের হার বেড়েছে ২৬ শাতংশ ও প্রসব-পরবর্তী দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতি আইইউডি ব্যবহারের হার বেড়েছে ১৪ শতাংশ ও ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহারের হার বেড়েছে ৪২ শতাংশ। বিডিএইচএস ২০২২ তথ্য অনুযায়ী সরকারি ও বেসরকারি সংস্থ্যার সমন্বিত কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশে বাড়িতে প্রসবের হার কমে ৩৫ শতাংশ হয়েছে। পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনালের বাস্তবায়নে ইউএসএআইডি সুখী জীবন প্রকল্পের আওতায় ময়মনসিংহ বিভাগের মোট ১২৩৫ জন সেবাপ্রদানকারী প্রশিক্ষণ পেয়েছেন।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সুখী জীবন প্রকল্পে কর্মরত টেকনিক্যাল ডিরেক্টর ডা. শারমিন সুলতানা, ডা. নার্গিস মোর্শেদা, এডিসিসি ও রিজিওনাল কনসালটেন্ট, ময়মনসিংহ এর সহযোগিতায় উন্মুক্ত আলোচনাও পরিচালনা করেন। বক্তারা সুখী জীবন প্রকল্প এবং কমিউনিটিভিত্তিক প্রসব-পরবর্তী পরিবার পরিকল্পনা সেবার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন ও এই কর্মসূচির প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব উপস্থাপন করেন।

উপস্থাপনায় উন্মুক্ত আলোচনায় ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও শেরপুর জেলার সম্মানিত উপ-পরিচালকরা, ময়মনসিংহ সদর, ঈশ্বরগঞ্জ, গৌরীপুর, নেত্রকোনা সদর, জামালপুর সদর, শেরপুর জেলার শ্রিবরদী উপজেলার সব কর্মকর্তা তাদের মূল্যবান বক্তব্য ও মতামত প্রদান করেন।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ময়মনসিংহ উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘সুখী জীবনের উপস্থাপনার মাধ্যমে আমরা দেখতে পেয়েছি প্রসব-পরবর্তী পরিবার পরিকল্পনার হার কর্মরত এলাকায় নন কর্মরত এলাকা থেকে ১২ শতাংশ বেশি। সে লক্ষ্যে গর্ভবতী তালিকা পূরণের মাধ্যমে গর্ভবতী রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিতকরণ, অঘঈ, চঘঈ চেক আপ এবং প্রসব-পরবর্তী পরিবার পরিকল্পনা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি কাজ করার জন্য সুখী জীবনকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।’ সেইসঙ্গে সুখী জীবনের কার্যক্রমের সময়কাল বাড়ানো এবং আরো প্রসারিত করার মাধ্যমে বিশেষ করে দুর্গম এলাকাগুলোকে তাদের কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেন।