যাত্রী কল্যাণ সমিতি

বিআরটিএ’র প্রতিবেদন প্রশ্নবিদ্ধ

প্রকাশ : ০৯ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদযাত্রায় বিভিন্ন সড়কে সংগঠিত দুর্ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তৈরি পরিসংখ্যান প্রতিবেদনকে প্রশ্নবিদ্ধ বলে উল্লেখ করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। পাশাপাশি নিজেদের করা প্রতিবেদনটিকে সঠিক দাবি করেছে সংগঠনটি। গতকাল সোমবার সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী একথা জানান। বিআরটিএ’র তৈরি প্রতিবেদনে দুর্ঘটনা ও হতাহতদের সংখ্যা কম দেখানো হয়েছে দাবি করে তাদের এপ্রিল মাসের দিনভিত্তিক দুর্ঘটনার তথ্য যাত্রী কল্যাণ সমিতিকে দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদারের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ অনুরোধ জানানো হয়। এর আগে এবারের ঈদযাত্রায় ১৫ এপ্রিল থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত ১৫ দিনে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত ও ৫৬৫ জন আহত হয়েছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

পরের দিন বিআরটিএ’র পক্ষ থেকে ওই প্রতিবেদনকে অবাস্তব ও কাল্পনিক দাবি করে তাদের কাছে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে চিঠি দেয়া হয় বলে জানান মোজাম্মেল হক চৌধুরী। চিঠিতে একই সময়ে বিআরটিএ’র প্রতিবেদনের চেয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ৫১টি, নিহত ৮৯ জন, আহত ৫৫ জন বেশি কেন হয়েছে- ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। বিষয়টি বিশ্লেষণের জন্য বিআরটিএ’র করা ১ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দিনভিত্তিক সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদনের বিস্তারিত তথ্য যাত্রী কল্যাণ সমিতির কাছে পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি। ওই প্রতিবেদনটি পাওয়া গেলে দ্রুততম সময়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদনের বিস্তারিত তথ্য বিআরটিএ’র কাছে জমা দেয়া হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। যাত্রী কল্যাণ সমিতির চিঠিতে বলা হয়, ‘বিআরটিএ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন তৈরি করে মাসভিত্তিক প্রকাশ করছে। পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিআরটিএ’র প্রতিবেদনের সাথে পুলিশের প্রতিবেদন বা বেসরকারি কোনো সংগঠনের প্রতিবেদনের মিল নেই। যাত্রী কল্যাণ সমিতির ঈদযাত্রার সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন ১৫ এপ্রিল থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত ১৫ দিনে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত, ৫৬৫ জন আহত হয়েছে, যা দেশের বহুলপ্রচলিত ও বিশ্বাসযোগ্য গণমাধ্যমগুলোতে উঠে এসেছে। তা আমরা একত্রিত করে প্রতিবেদন তৈরি করেছি মাত্র।’ বাংলাদেশে সংগঠিত দুর্ঘটনার ৪০ শতাংশও গণমাধ্যমে আসে না উল্লেখ করে যাত্রী কল্যাণ সমিতির চিঠিতে বলা হয়, এবারের ঈদে আগে-পরে ১৩ দিনে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ১ হাজার ৪ জন সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত রোগী ভর্তি হয়েছে। চিঠিতে আরো বলা হয়, এছাড়া সারাদেশে ১২টি বিভাগীয় বড় হাসপাতাল রয়েছে। দেশের ৬৪ জেলায় ৬৪টি জেলা সদর হাসপাতাল, ৪৯৫টি উপজেলায় ৪৯৫টি উপজেলা হাসপাতালে ঈদের আগে পরে ১৫ দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত রোগী ভর্তির তথ্য পাওয়া গেলে দেশে মহামারি সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াবহতার চিত্র চরমভাবে ফুটে উঠত।

সারাদেশের হাসপাতালগুলোর হিসাব বাদ দিয়ে কেবল ঈদের আগে-পরে ১৫ দিনে উল্লেখিত তিন হাসপাতালে ২ হাজার জন সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগী ভর্তি হয়েছে। এই তিন হাসপাতালে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগীর পরিমাণের চেয়ে বিআরটিএ’র সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদনে উঠে আসা আহত রোগীর পরিমাণ কয়েক গুণ কম হওয়ায় বিআরটিএ’র সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদনটি অবাস্তব ও কাল্পনিক কি না- বিভিন্ন মহল থেকে যাচাই-বাছাইয়ের প্রশ্ন উঠেছে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির চিঠিতে আরো বলা হয়, সরকার সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে আন্তরিক।