যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের সোহরাব হোসেনের আঙুরের বাগানে গেলে সবারই চোখ জুড়িয়ে যাবে। বাগানের প্রায় সব গাছেই আঙুর ধরেছে। ফলগুলো দেখতে বেশ বড়ও হয়েছে। সুতার জালে তৈরি মাচায় ঝুলতে থাকা আঙুরের থোকা থেকে চোখ সরাতে পারবেন না।
আমাদের এ দেশে অন্য কোন দেশের ফল চাষ হতো না, সে সব অনেক ফল এখন আমাদের দেশে চাষ হচ্ছে। অনেকে সফলও হয়েছেন। তেমনি আঙুর চাষে সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন মো. সোহরাব হোসেন মহলদার। ভারত থেকে চয়ন ও মানিকচমনসহ ছয় জাতের আঙুরের চারা সংগ্রহ করে সমন্বিত ফল চাষ করে লাভবান হওয়ার আশা তার। সোহরাব হোসেন যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার ফতেপুর গ্রামের মো. আত্তাব উদ্দীন মহলদারের ছেলে।
সোহরাব হোসেন ২৫ শতক জমিতে আঙুরের চাষ করছেন। ১০ মাস আগে লাগানো ৩৮টি গাছের মধ্যে ২৮টিতে আঙুর ধরেছে। যে সব গাছে আগে ফল এসেছে সেগুলো বেশ বড় হয়েছে। সুতার জালে তৈরি মাচায় ঝুলছে আঙুরের থোকা। তবে বাগানে লাগানো চয়ন জাতের গাছে আঙুর ধরেছে বেশি। ৩০ দিনের মধ্যে প্রতি গাছ থেকে ৩ থেকে ৪ কেজি আঙুর সংগ্রহ করা যাবে আশা করছেন সোহরাব হোসেন।
অন্য ফল চাষের মতো নিয়মিত সেচব্যবস্থা ও পরিচর্যায় আঙুর চাষেও সফল হওয়া সম্ভব বলে জানান চাষি। তার বাগানের চারপাশে আঙুর ছাড়াও রামভুটান, ভারতীয় ওডিসি-৩ জাতের বারোমাসি শজনে, ভিয়েতনামের আখসহ রয়েছে নানা বিদেশি ফলের গাছ।
সোহরাব হোসেন বলেন, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ৩৮টি আঙুর গাছের চারা রোপণ করি। এক এজেন্সির মাধ্যমে ভারত থেকে কিনেছিলাম প্রতি পিচ চারা ৬০০ টাকা করে কিনেছিলাম। ইউটিউবে আঙুর চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে আঙুর শুরু করি। ফুল আসার পর থেকে ১২০ দিনের মধ্যে আঙুরগাছ থেকে ফল সংগ্রহ করা যায়। এখন অল্প পরিসরে আঙুর বিক্রি শুরু করেছি। কয়েকজন ক্রেতা এরই মধ্যে ক্ষেত দেখতে এসেছিলেন।
এই উদ্যোক্তার থেকে জানা যায়, প্রতিটি গাছে বছরে দুইবার আঙুর ধরে। একবার গাছ লাগালে ৩৫-৪০ বছর টানা ফল পাওয়া যাবে।
ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ হোসেন পলাশ জানান, আমাদের দেশের মাটি ও আবহাওয়া প্রতিকূল হওয়ার কারণে আঙুর চাষ অনেক কঠিন, তবে নতুন উদ্যোক্তাদের এমন চাষাবাদ খুবই সম্ভাবনার বিষয়। সোহরাব হোসেনের আঙুর চাষ জেলায় দ্বিতীয় ও ঝিকরগাছা উপজেলায় প্রথম। আঙুর চাষে কৃষি বিভাগের পূর্ণ সহযোগিতা আছে।