গার্ড অব অনার প্রদান নিহত সৈনিকের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম
প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
পাংশা (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
বান্দরবানের রুমা উপজেলার ছিলোপি পাড়া এলাকায় কেএনএফ’র আইইডি বিস্ফোরণে সেনাবাহিনীর এক সৈনিক নিহত হওয়ার ঘটনায় তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। গতকাল বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের সময় একটি হেলিকপ্টারে করে নিহত সেনা সদস্যের মরদেহ আনা হয়। পরে সেখান থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় নিহতের নিজ বাড়িতে। সেখানে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে গার্ড অব অনার শেষে দাফন সম্পন্ন করা হয়। গার্ড অব অনার প্রদান করেন যশোর ক্যান্টনমেন্টের ক্যাপ্টেন মাহফুজ রহমানসহ অন্য অতিথিরা। পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক যুগ আগে সৈনিক হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। তার স্ত্রী ও তিন বছরের যমজ দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সৈনিক তোজাম খান রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের জাগির বাগলি গ্রামের মো. লুকমান মাস্টারের ছেলে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এর তথ্যে জানানো হয়েছে বান্দরবানের রুমা উপজেলার ছিলোপি পাড়া এলাকায় গত বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনীর একটি টহল দল কেএনএফ (কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট) এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সদর দপ্তরসহ একটি গোপন প্রশিক্ষণ ক্যাম্প দখল করে।
কেএনএফ’র প্রশিক্ষণ ক্যাম্প এলাকার আশপাশে বসবাসরত স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে রুমা সেনা জোনের একটি টহল দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। কেএনএফ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের কাছাকাছি পৌঁছালে কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলটি পালিয়ে যায়। তবে সেনা টহল দলটি সন্ত্রাসী কর্তৃক বিক্ষিপ্তভাবে পুঁতে রাখা আইইডি (ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণের মুখে পড়ে। বিস্ফোরণে আহত একজন সেনাসদস্যকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হেলিকপ্টারযোগে দ্রুততার সঙ্গে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সৈনিক তুজাম (বয়স-৩০ বছর) মৃত্যুবরণ করেন।
সাধারণ জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে সেনাবাহিনীর বিশেষায়িত দল কর্তৃক এ ধরনের আরো সম্ভাব্য আইইডি শনাক্ত ও নিষ্ক্রীয়করণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। দেশমাতৃকার জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহিদ সেনাসদস্যের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে সেনাবাহিনী প্রধান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ও তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।
উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিক সময়ে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার পাহাড়ি জনপদে ক্রমাগত হত্যা, অপহরণ, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির মতো কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অরাজকতা সৃষ্টি করে চলেছে।