কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শক্তি, যারা আমাদের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল। তারা এখনও বাংলাদেশের স্বাধীন-সার্বভৌম অস্তিত্বকে মেনে নিতে পারে না, তারা এখনও ষড়যন্ত্র করছে। কাজেই আমাদের ইতিহাস জানতে হবে এবং সেই আলোকে আগামী প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবে। আমরা দেখছি নানা গুজব, স্যাংশন দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত ‘ছয় দফা দিবস স্মরণে আলোচনা সভায়’ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এসব কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া র্যাবের স্যাংশনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বে যখন আইএসের জঙ্গি তৎপরতা লাগামহীন, শেখ হাসিনা তার দূরদর্শী কৌশলে বাংলাদেশে তাদের অপতৎপরতা রুখে দেন। সেখানে কী কারণ থাকতে পারে র্যাবকে স্যাংশন দেয়ার? এত বড় কাজটি যারা করেছে, তারা ৮৫ ভাগ মুসলমানদের দেশ পাকিস্তানে এখনো নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। আফগানিস্তানে এত দিন যুদ্ধ করে অবশেষে বাধ্য হয়েছে তালেবানদের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে। আমরা সন্ত্রাসীদের কাছে আত্মসমর্পণ করিনি। প্রেসিডেন্ট বাইডেন, আপনি দেখেছেন আপনার সৈন্যরা কীভাবে পলায়ন করেছে। আমরা আপনাদের মতো পালিয়ে যাইনি, আমরা সামনে থেকে মোকাবিলা করেছি। যারা সামনে থেকে মোকাবিলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আপনারা স্যাংশন দেন, মানবাধিকারের কথা বলেন। যারা মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করছে, তাদেরও যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচার হওয়া উচিত উল্লেখ করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পুরো মধ্যপ্রাচ্যটাকে আপনারা (যুক্তরাষ্ট্র) ধ্বংস করেছেন, লন্ডভন্ড করেছেন। ইরাক আরব দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শিক্ষিত ও সভ্য জাতি।
তাদের সভ্যতা, ইতিহাস, ঐতিহ্য নিয়ে বিশ্ব গর্ববোধ করে। সেই দেশটাও আজ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কোথায় আপনাদের গণতন্ত্র? প্রেসিডেন্ট পরিবর্তন হয়েছে, কই গণতন্ত্র তো দেখি না এই মিডল ইস্টে! আপনাদের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড! এটি আমাদের আহত করে! বিভিন্ন উপজাতিতে একটি দেশকে একটি জাতিরাষ্ট্রে পরিণত করেছেন গাদ্দাফি, তাকে হত্যা করেছেন, সাদ্দাম হোসেনের বিচারের নামে প্রহসন করেছেন। আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই। এই যুদ্ধাপরাধ যারা ঘটাচ্ছে, যারা মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করছে, তাদেরও য্দ্ধুাপরাধী হিসেবে বিচার হওয়া উচিত। কৃষিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে বঙ্গমাতার নির্দেশনায় ছাত্রলীগই ৭ জুনের সেই ঐতিহাসিক দিনটি সৃষ্টি করেছে। আমরা যদি অতীত ইতিহাস না জানি তাহলে আমরা ভবিষ্যৎ গড়তে পারব না। আমরা যদি হাজার বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করি, তাহলে দেখতে পাব বাংলাদেশ সেই অর্থে কখনও স্বাধীন ছিল না, স্বশাসিত ছিল না।
স্বাধীনতার চেতনা যারা জাগ্রত করেছিল অসাম্প্রদায়িক চেতনা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই ছিল তাদের লক্ষ্য। এ সময় তিনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বলেন, এখানে তোমাদের উচ্ছ্বাস দেখে আমরা বিশ্বাস, যত ষড়যন্ত্রই করুক, সরকারে আওয়ামী লীগ থাক বা না থাক, রাজনীতির মূল নিয়ন্ত্রক হিসেবে আওয়ামী লীগ থাকবে। প্রধান আলোচকের বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন, বাঙালির মুক্তির আকাঙ্ক্ষা পিতা মুজিব উপলব্ধি করতেন। উপলব্ধি করতেন বলেই তিনি ছয় দফা রচনা করেছেন, রচনা করেছেন তার আত্মোপলব্ধি থেকে। ছয় দফা বাঁচার দাবি প্রবর্তনের ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুকন্যার কাছে এসে ভোট এবং ভাতের অধিকার পেলো এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারাবাহিকতা, তারপর স্মার্ট বাংলাদেশ। এ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, ঢাবি শাখা সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানবীর হাসান সৈকত।