তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবিতে দেশব্যাপী মানববন্ধন পালন করেছে সন্ধানী বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ। গতকাল দেশব্যাপী সংস্থাটি ৩৫টি ইউনিটে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন থেকে তরুণ চিকিৎসকরা তামাকের ক্ষতিকর দিক থেকে জনসাধারণকে রক্ষায় এবং ২০৪০ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনীর খসড়া দ্রুত অনুমোদনের দাবি জানান। এ সময় বক্তারা বলেন, দেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। আর তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এছাড়া তামাক ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে। তাই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রণীত খসড়া সংশোধনীটি আসন্ন সংসদ অধিবেশনে উত্থাপন এবং সংসদ সদস্যদের ভোটে পাস করে চূড়ান্ত করা হলে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দুর্বলতাগুলো দূর হবে। মানববন্ধনে অংশ নেয়া ইউনিটগুলো হলো- ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ, ঢাকা ডেন্টাল কলেজ, উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ, ইস্ট ওয়েস্ট অ্যান্ড আপডেট ডেন্টাল কলেজ, বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ, শহীদ তাজউদ্দীন মেডিক্যাল কলেজ, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ, কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজ, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ, শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ, কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ, নোয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ, রাঙ্গামাটি মেডিক্যাল কলেজ, চাঁদপুর মেডিক্যাল কলেজ, সিলেট এমএজি মেডিক্যাল কলেজ, জালালাবাদ রাগিব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ, পার্ক ভিউ মেডিক্যাল কলেজ, শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ হবিগঞ্জ, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ, এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ সিরাজগঞ্জ, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ, কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ, মাগুরা মেডিক্যাল কলেজ, যশোর মেডিক্যাল কলেজ, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ, এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ, নীলফামারী মেডিক্যাল কলেজ, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ, শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ জামালপুর, শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ ও পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ। উল্লেখ্য, ইউনাইটেড ফোরাম অ্যাগেইনস্ট টোব্যাকো, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং সন্ধানী বাংলাদেশসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠন ও ১৫ হাজারের বেশি ব্যক্তি ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) যুগোপযোগী করে বৈশ্বিক মানদণ্ডে উন্নীত করতে ছয়টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করে। সেগুলো হলো- আইনের ধারা ৪ ও ৭ বিলুপ্ত করা, অর্থাৎ সব পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রর্দশনী নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির যে কোনো ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা; বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা এবং ই-সিগারেটসহ সব ইমার্জিং ট্যোব্যাকো প্রোডক্টস পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা।