বীরগঞ্জের মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন
তীব্র পানির সংকটে ৩২ হাজার মানুষ
প্রকাশ : ১১ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
দিনাজপুর প্রতিনিধি
মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের প্রায় ৩২ হাজার মানুষ তীব্র পানি সংকটে পড়েছেন। চলতি মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় ও টানা খরার কারণে এলাকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আশঙ্কাজনক হারে নেমে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী। বৃষ্টি না হলে পানির স্তর উপরে ওঠা যাবে না। তবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সাবমার্সিবল পাম্পের কারণে কিছুটা হলেও পানি পাচ্ছে এলাকাবাসী।
দিনাজপুরে বীরগঞ্জ উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের প্রায় ৩২ হাজার মানুষ তীব্র পানি সংকটের মুখে পড়েছেন। বিশেষ করে গৃহস্থালি কাজে দারুণ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ইউনিয়নের কয়েক হাজার নারী। চলতি মৌসুমে বৃষ্টির অভাবে চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের মানুষ। বৃষ্টি না হওয়ায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আশঙ্কাজনক হারে নিচে নেমে গেছে। ইউনিয়নের মাহানপুর, শিলপাড়া নদুডাঙ্গী, সেনপাড়া, কর্মকারপাড়া, নিপুনপাড়া, রংপুরিয়াপাড়া, চকপাইকপাড়া ও শিবডাঙ্গী গ্রামের মানুষ রয়েছেন তীব্র পানির সংকটের মুখে। বৃষ্টি না হওয়ায় পানির স্তর ক্রমেই নিম্নমুখী হওয়ায় হস্তচালিত নলকূপে পানি উঠছে না। ১৫ বছর আগে এই ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ৭০ থেকে ৮০ ফিট পাইটের মাধ্যমে পর্যাপ্ত পানি উঠত। ৫-৭ বছর আগে ১৫০ থেকে ১৭০ ফিট পাইপ বসিয়ে নলকূপে পানি তোলার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু এখন ২০০ এর বেশি ফিট পাইপ বসিয়ে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ বৃষ্টি না হওয়ায় ইউনিয়নের পুকুর, খাল-বিল, জলাশয় শুকিয়ে গেছে। কৃষি কাজের জন্য বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বীরগঞ্জ উপজেলায় ২৯২টি গভীর নলকূপ চালু রেখেছেন। এর মধ্যে মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে রয়েছে ২১টি গভীর নলকূপ। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বীরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে প্রত্যেকটিতে ২৬টি করে সাবমার্সিবল পাম্প স্থাপন করেছেন। এর ফলে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছে মানুষ। তারপরেও বৃষ্টি না হওয়ায় তীব্র খরার কারণে গৃহস্থালি কাজে পানি পাওয়া খুব কষ্টকর হয়ে পড়েছে। জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী এ এন নাইমুল এহসান জানান, বৃষ্টি না হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই পানির স্তর ৪০ থেকে ৫০ ফিট নিচে নেমে গেছে। কেননা বর্ষা মৌসুমে ভূগর্ভস্থ স্তরে বৃষ্টির পানি জমা হয়। এর ফলে স্বাভাবেকভাবেই পানির স্তর উপরে উঠে আসে। তবে আমরা সাবমার্সেবল পাম্পের মাধ্যমে পানির সংকট অনেকটা দূর করতে পেরেছি। মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোপাল দেব শর্মা বলেন পুরো ইউনিয়ন জুড়ে পানির যে সংকট তা নতুন নয়। গত ৭-৮ বছর ধরেই খরা মৌসুমে তীব্র পানির শংকট দেখা যায়। গভীর নলকূপের জন্য কিছুটা হলেও পানির স্তর নিচে নেমে যায়। আবার কৃষি কাজে গভীর নলকূপ ব্যবহার না করলেও চলে না। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই পানির স্তর ক্রমশ নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। তাই স্বাভাবিকভাবে নলকূপে পানি ওঠায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বৃষ্টি না হলে এ অবস্থার উন্নতির সম্ভাবনা নেই। কেননা বৃষ্টির পানি আমাদের খাল-বিল পুকুরসহ জলাশয় জমা হলে তখন অনেকটা সংকট কেটে যাবে।