নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ছাত্রলীগ নেতা জামিউল ইসলাম জীবন হত্যা মামলার চার্জশিট (অপরাধ) আদালত গ্রহণ করায় চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ কে উপজেলা চেয়ারম্যানের আর্থিক ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।
গত বুধবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা-১ শাখার উপসচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মজুমদার স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই তথ্য জানা যায়।
এর আগে ওই মামলাজনিত কারণে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদ কারাগারে অবস্থান করায় আর্থিক সাক্ষরিত ক্ষমতা হারান। এই অবস্থায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে পরিচালনার জন্য প্যানেল চেয়ারম্যান-১ কে উপজেলা চেয়ারম্যানের আর্থিক ক্ষমতা প্রদান করা হয়। এ ঘটনার পর পালালেও উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় ফেরেন আসাদ। পরে অন্য একটি মামলায় হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হলে নিম্ন আদালতের নির্দেশে কারাগারে রাখা হয় তাকে। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন। তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে চার্জশিট দিয়েছে। এ কারণে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে মন্ত্রণালয়। নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোজিনা আক্তার জানান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়ার খবর বিভিন্ন লোকমুখে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেনেছেন। তবে এখনো মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি হাতে পাননি। চিঠি হাতে পাওয়ার পর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক এ বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখা হবে। বরখাস্তকৃত নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, এ বিষয়ে আদালতে যাবেন বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর দিনগত রাতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদ ও তার তিন ভাইসহ অন্যরা ছাত্রলীগ নেতা জামিউল ইসলাম জীবনকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করেন। উদ্ধার করে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় নিহত ছাত্রলীগ নেতা জীবনের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে নলডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার পর থেকে পলাতক ছিলেন আসাদ। পরবর্তীকে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় ফিরে আসেন তিনি। পরে অন্য একটি মারামারি মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়। এছাড়া উচ্চ আদালত থেকে নেয়া জামিনের মেয়াদ শেষ হলে নিম্ন আদালতের নির্দেশে কারাগারে রাখা হয় তাকে। এরপর দীর্ঘদিন কারাগারে অবস্থান করা অবস্থায় আইনজীবীর মাধ্যমে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন তিনি।