সিরাজগঞ্জে পৃথক হত্যা মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেইসাথে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ব্রাহ্মণগাঁতি গ্রামের সাদ্দাম হোসেন, নাটোরের ক্ষিরপোতা গ্রামের মাসুদ ও সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার গোপালপুর গ্রামের মনিরুল ইসলাম। গতকাল দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক এরফান উল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আলোকিত বাংলাদেশকে জানান, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ব্রাহ্মণগাতি গ্রামের হাসান তালুকদারের প্রথমপক্ষের ছেলে মাসুদ ওরফে নূরনবী ও দ্বিতীয়পক্ষের সন্তান ভিকটিম শিউলি। মাসুদকে সঠিকভাবে লালন-পালন না করায় বাবা ও সৎ বোনের ওপর তার ক্ষোভ ছিল। এদিকে শিউলিকে অন্যত্র বিয়ে দেয়ায় ক্ষুব্ধ ছিল তার প্রেমিক সাদ্দাম। এ অবস্থায় সাদ্দাম হোসেন ও মাসুদ শিউলিকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০১০ সালের ২০ নভেম্বর শিউলি বাবার বাড়িতে বেড়াতে এলে তাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। পরদিন পার্শ্ববর্তী রাজিবপুর বিল থেকে শিউলির গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ব্যাপারে হাসান তালুকদার বাদী হয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। দীর্ঘ শুনানি শেষে বিচারক গতকাল এ রায় ঘোষণা করেন। অন্যদিকে বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ি গ্রামের সাহিদা খাতুন প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর শিশু সন্তানসহ গোপালপুর গ্রামের মনিরুলকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এ বিয়ের পর থেকেই মনিরুল শাহিদার প্রথম পক্ষের ৭ বছরের শিশু শাহাদৎ হোসেনকে মেনে নিতে পারেনি। এ অবস্থায় ২০১৯ সালের ১৯ মে বিকালে মিষ্টি খাওয়ানোর কথা বলে ওই শিশুকে নিয়ে নিখোঁজ হয় মনিরুল। এ নিখোঁজের ছয় দিন পর শাহজাদপুর উপজেলার করতোয়া নদীর চরে অর্ধগলিত অবস্থায় ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ব্যাপারে শাহিদা খাতুন বাদী হয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে এবং শুনানি শেষে গতকাল বিচারক উল্লেখিত রায় ঘোষণা করেন।
