মুদ্রণ শিল্প সমিতি
এনসিটিবি চেয়ারম্যান ও উৎপাদন নিয়ন্ত্রকের অপসারণ দাবি
প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকারের বিনামূল্যের বইয়ের সিংঘভাগ কাজ অগ্রণী ও কচুয়া প্রিণ্টিং প্রেসকে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতি। দরপত্রে কারসাজি ও নানা অনিয়মের অভিযোগে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান ও উৎপাদন নিয়ন্ত্রকের অপসারণ দাবি করেছে তারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে ছাপাখানা মালিকদের সংগঠন-বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির চেয়ারম্যান শহীদ সেরনীয়াবাত।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার দৃঢ় সিদ্ধান্তের কারণে ২০১০ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ১ম শ্রেণি থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাবর্ষের ১ম দিনই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে এনসিটিবির সহযোগিতায় সক্ষমতার অধিক কার্যাদেশপ্রাপ্ত অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেস এবং কচুয়া প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন্স ছাত্রছাত্রীদের পাঠের অযোগ্য পাঠ্যপুস্তক বিলম্বে সরবরাহ করেছে। কিন্তু পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এ বিলম্ব নথিভুক্ত না করে যথাসময়ে সরবরাহ করেছে সফটওয়্যার জালিয়াতির মাধ্যমে। তিনি আরও বলেন, এবছর সক্ষমতা না থাকার পরও অগ্রণী ও কচুয়া প্রিন্টিং প্রেস চলতি বছর প্রাথমিকের চার কোটি বই ছাপিয়েছে। টেন্ডারে কারসাজি করে এনসিটিবির সহায়তায় এবছর প্রাথমিকের প্রায় সাত কোটি বই ছাপাতে যাচ্ছে। এছাড়াও নিম্নমানের পাঠ্যপুস্তকের জন্য এই দুই প্রেস অন্যতম দায়ী বলেও জানানো হয়।
এসময় পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও সরবরাহ দরপত্রে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান ও বর্তমান উৎপাদন নিয়ন্ত্রক স্বউদ্যোগে দরপত্রের শর্ত সংশোধন করে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে দুইটি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানকে সক্ষমতার অধিক কাজ প্রদান করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এনসিটিবির এই ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষকতার কারণে বর্তমান সরকারের শিক্ষাবর্ষের ১ম দিনে বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়ার বিরল সাফল্য প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। জানুয়ারি মাসে বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও এই দুই প্রতিষ্ঠানের কারণে এপ্রিল-মে মাসেও শতভাগ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়নি। অথচ এনসিটিবি একাধিক প্রতিষ্ঠানকে কোটি কোটি টাকা জরিমানা করলেও এই দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানার আওতার বাইরে রেখেছে।
সংবাদ সম্মেলনে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক স্তরের দরপত্রে দুইটি প্রতিষ্ঠানে মেশিনের বিপরীতে সক্ষমতার বহুগুণ বেশি কার্যাদেশ প্রদান বন্ধ, অনিয়ম ও দুর্নীতির সহায়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেস এবং কচুয়া প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন্সের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিচার দাবি করা হয়। এসময় মুদ্রণ শিল্প সমিতির অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।