বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে, শর্ত আরোপ করেনি বলে মন্তব্য করেছেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। সরকার দেশের জনগণের স্বার্থ বিবেচনায় প্রয়োজনীয় পরামর্শ গ্রহণ করে থাকে। গতকাল রাজধানীতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্টে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত এক ছায়া সংসদে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার টার্গেট অলৌকিক, প্রায় অসম্ভব। তবে সে লক্ষ্যে সবাইকে চেষ্টা করতে হবে। এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর কারসাজির কারণে পণ্যমূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। সড়কে চাঁদাবাজির কারণেও ভোক্তাকে অধিক মূল্য দিতে হয়, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কয়েকটি খাতে ভর্তুকি কমানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার প্রান্তিক জনগণের স্বার্থ বিবেচনায় ভর্তুকি দিয়ে থাকে। তবে ভর্তুকি প্রদান কোনো দীর্ঘমেয়াদি কৌশল হতে পারে না। সে কারণে এবার কয়েকটি খাতে ভর্তুকি কমানো হয়েছে। বিদেশে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিদেশে পাচার করা টাকা দেশে ফেরত আনা কঠিন। পাচারকারীরা ফেরত আনার জন্য টাকা পাচার করেনি। তিনি বলেন, উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদনে রাজনৈতিক, আঞ্চলিক ও গোষ্ঠীগত চাপ থাকে, যা অনেক সময় উপেক্ষা করা যায় না। এসব চাপের কারণে অনেক সময় প্রকল্প ব্যয় বেড়ে যায়। সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে সামাল দেয়ার চেষ্টা করলে সেটি মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে। এছাড়াও রিজার্ভের ঘাটতিতে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমায় মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। গত ১৫ বছরে যেখানে ১ শতাংশের বেশি বিনিয়োগ বাড়ানো যায়নি সেখানে প্রস্তাবিত বাজেটে আগামী অর্থবছরে ৪ শতাংশ বিনিয়োগ বৃদ্ধির যে টার্গেট নেয়া হয়েছে তা বাস্তবসম্মত নয়। এছাড়াও রাজস্ব আহরণের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে কর ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের ঘাটতি ও রাজস্ব বোর্ডের সক্ষমতার অভাবে তা অর্জন সম্ভব হবে না।