বিএনপির এক দফার আন্দোলন এখন দোতারার সুর

বললেন তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  চট্টগ্রাম ব্যুরো

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যত কথাই বলুক না কেন আগামী নির্বাচনেও বিএনপিকে আসতে হবে। আশা করব ২০১৮ সালের মতো গাধার জল ঘোলা করে খাওয়ার মতো করে নয়, এবার বিএনপি আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েই নির্বাচনে আসবে। বিএনপির এক দফার আন্দোলন কতটুকু হবে বা সেটি করতে গেলে আমাদের কি করতে হবে সেটিও আমাদের জানা আছে। তিনি বলেন, বিএনপি ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুখে দোতারার সুরের মতো করে এক দফার আন্দোলন আমরা সবসময় শুনতে পাচ্ছি। ওনারা কতটুকু আন্দোলন করতে পারবে সেটা আমরা জানি। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব আমরা দেখেছি। সেটি আমরা সামাল দিয়ে সরকার পাঁচ বছর টিকেছে। এরপর ২০১৮ সালে আবার নির্বাচন হয়েছে। সেই নির্বাচনে গাদা জল ঘোলা করে খাওয়ার মতো করে বিএনপি নির্বাচনে এসেছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের ভিত জনগণের গভীরে প্রোথিত। আওয়ামী লীগ সরকারকে ধাক্কা দিতে গেলে বিএনপিই ধাক্কা খেয়ে পড়ে যাবে। গত বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বিভিন্ন সংস্থার অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত উন্নয়ন সমন্বয় সভাশেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের ঈদের পর সর্বশক্তি দিয়ে সরকার পতনে এক দফা আন্দোলনের ঘোষণার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা এক দফার আন্দোলন মাঝেমধ্যে ঘোষণা দেন। ওনারা ২০১৩ সালেও এক দফার আন্দোলন ঘোষণা করেছিলেন। আবার ১৮ সালেও এক দফার আন্দোলন করেছিল। কিছুদিন আগেও বলেছিল এক দফার আন্দোলন। আসলে তাদের এক দফার আন্দোলন এখন দোতারার সুরের মতো শোনায়। তথাকথিত আইপি টিভির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে নাকি দুয়েকদিন পর আবার আগের মতোই চলবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন দ্রুততার সঙ্গে এ ব্যাপারে অভিযান পরিচালনা করেছে। অন্যান্য জেলাতেও শুরু হয়েছে, সারা দেশেই এটি করা হবে। ইউটিউব চ্যানেল অবশ্যই যে কেউ চালাতে পারে, কিন্তু ইউটিউব চ্যানেলের নাম দিয়ে চাঁদাবাজি করা, একেবারে একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসা এবং সেখানে কোনো নিউজ করতে গেলে এত টাকা দিতে হবে, সেটি আবার চিঠি দিয়ে জানানো, রেট করে দেয়া, এগুলো তো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি বলেন, সরকারের যে সম্প্রচার এবং ক্যাবল অপারেটিং নীতিমালা আছে সেই নীতিমালা লঙ্ঘন করে তো কেউ কিছু করতে পারে না। যারা নীতিমালা লঙ্ঘন করছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং আমরা চিঠি দিয়েছি সারা দেশেই এই অভিযান চলবে। কোনো কোনো জেলায় এরইমধ্যে শুরু হয়েছে। ঈদের পর অনেক জেলায় শুরু হবে। দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল আজহার আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের নানাবিধ পদক্ষেপের কারণে এবার ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন হচ্ছে। ট্রেনে, বাসে এবং লঞ্চে যারা যাচ্ছেন সবাই ভালো অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন। ঈদযাত্রা যাতে ভালো হয় সেজন্য সরকার একদিন ছুটি বাড়িয়েছিল। এজন্য সড়ক পরিবহন, রেলপথ এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রামকে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হয়। এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী। প্রায় এক কোটির কাছাকাছি মানুষের বসবাস এই শহরে এবং দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর এটি। চট্টগ্রামের বিভিন্ন সংস্থা, বিশেষ করে সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা পরিষদ, রেলওয়ে, বন্দরসহ সবার সঙ্গে আজকে আমরা একটি সমন্বয় সভা করেছি। আপনারা জানেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে চট্টগ্রামে লক্ষ হাজার কোটি টাকার মতো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে এবং হচ্ছে। খুব শিগগির প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন। এটি দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম নদীর তলদেশ দিয়ে সড়ক টানেল। সেটির সঙ্গে নির্মিত আউটার রিং রোড এত নান্দনিক রাস্তা হয়েছে আকাশ থেকে ভিউটা যে এত চমৎকার- এভাবে চট্টগ্রাম শহরটাই বদলে গেছে।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন চট্টগ্রাম শহরে মেট্রোরেল স্থাপনের জন্য ফিজিবিলিটির কাজ এরইমধ্যে শুরু হয়েছে। আমরা সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে আজকের সমন্বয় সভায় আলোচনা করেছি। বিশেষ করে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পসহ অন্যান্য সব প্রকল্প নিয়ে আমরা আজকে আলোচনা করেছি। আন্তঃসংস্থার মধ্যে কিছু সমন্বয়ের অভাব সবসময় থাকে এটা স্বাভাবিক। সেই সমন্বয়টা যাতে হয় এবং একে অপরের চাহিদা যাতে মেঠাতে পারে সেটি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আমরা গ্রহণ করেছি। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তার মধ্যে জঙ্গল সলিমপুরকে অবৈধ বসতিমুক্ত করার জন্য আজকে আলোচনা হয়েছে।

তবে সেখানে যারা বসবাস করছেন কেউ গৃহহীন থাকবে না। সেখানে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ স্বল্পমূল্যে ফ্ল্যাটের ব্যবস্থা করবে। সে বিষয়ে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু সব গৃহহীনকে গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছেন, দেশে কোনো গৃহহীন থাকবে না শেখ হাসিনার ঘোষণা এই স্লোগানে যেহেতু আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, সুতরাং সেখানে যারা বসবাস করছে কেউ গৃহহীন থাকবে না, সবাইকে পুনর্বাসিত করা হবে। বিভিন্ন মামলার আসামি অনেক সন্ত্রাসী সেখানে অবস্থান নিয়েছে, তাদের থেকে সরকারি এ সম্পত্তি মুক্ত করতে হবে।