নিষিদ্ধ প্রচলিত পলিথিনের বিকল্প হিসেবে বায়োডিগ্রেডেবল পলিন বাজারজাত করা এবং ব্যবহৃত পলিথিন রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে পুনঃব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। তিনি আরো জানান, গত সাড়ে চার বছরে (২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে গত মে মাস পর্যন্ত) নিষিদ্ধ পলিথিন শপিংব্যাগ ব্যবহারের অপরাধে ১৬৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এই সময়ে এক হাজার ৭৭১ দশমিক ৫৫ মেট্রিক টন নিষিদ্ধ পলিথিন, দানা ও পলিমার জব্দ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে এসব তথ্য জানান তিনি। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনেওয়াজের প্রশ্নের লিখিত জবাবে মন্ত্রী আরো জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন উৎপাদন ও বিপণনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতা পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ বা সীমিত করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট বা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট ও এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আইন অমান্য করে অবৈধ পলিথিন শপিংব্যাগ উৎপাদনকারী, পরিবহনকারী, বিক্রেতা এবং মজুদদারকে মোবাইল কোর্টের আওতায় এনে নিয়মিত জরিমানা ধার্য্য ও আদায় করা হচ্ছে। পলিথিনসামগ্রী উৎপাদনকারি বহু কারখানা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।
মন্ত্রী জানান, মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করে ৩৪০টি মামলায় জরিমানা করা হয়েছে ৫ কোটি ৬১ লাখ ১৩ হাজার ১৫০ টাকা। যার মধ্যে ৫ কোটি ৬০ লাখ ৪৩ হাজার ১৫০ টাকা আদায় করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, পলিথিনের বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশের বিজ্ঞানী মোবারক আহমদ খান আবিষ্কৃত পাটজাত পলিথিন (বায়োডিগ্রেডেবেল বায়োপ্লাস্টিক) ‘সোনালী ব্যাগ’-এর দাম কমানোর জন্য বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড ১০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছে।
এছাড়া মোবাইলকোর্ট ও এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে জনসাধারণকে নিরুৎসাহিত করণের জন্য বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচারণার কার্যক্রমও পরিচালনা করা হচ্ছে।
একই প্রশ্নের জবাবে পরিবেশমন্ত্রী জানান, পরিবেশ সংরক্ষণ, পরিবেশগত মান উন্নয়ন ও পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও প্রশমনের জন্য গৃহস্থালি বর্জ্য ও প্লাস্টিক বর্জ্যরে সুষ্ঠু ও স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থাপনার জন্য সরকার পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ এবং ‘কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০২১ প্রণয়ন করেছে। এই বিধিমালায় পরিবেশ বিনষ্টকারী পলিথিনের উৎপাদন ও বিপণন ও ব্যবহার বন্ধে সংশ্লিষ্ট সবার দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া আইন অনুযায়ী ক্ষেত্রবিশেষে বিভিন্ন পুরুত্বের পলিথিনের উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।