সেমিনারে ঢাবি ভিসি
ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সম্পর্ক জোরদার করার আহ্বান
প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ঢাবি প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাকে যৌক্তিক পরিণতিতে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদানের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, শিল্প মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সম্পর্ক আরো জোরদারের মাধ্যমে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে দেশের চামড়া খাতকে অনন্য উচ্চতায় নেয়া সম্ভব হবে। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘আইএলইটি’এস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইনোভেশনশস ফর দ্য লেদার ট্যানিং প্রসেস অ্যান্ড সলিড ওয়াস্ট ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক দিনব্যাপী এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট এবং দি এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই সেমিনার আয়োজন করে। সেমিনারে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. নুরুজ্জামান, এনডিসি বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। দি এশিয়া ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ স্বাগত বক্তব্য দেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের একদল গবেষক পরিবেশবান্ধব উপায়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের এক নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। এই প্রযুক্তিতে রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার ৩০ শতাংশ কমিয়ে স্বল্প খরচে উদ্ভাবিত এনজাইম ব্যবহার করে প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে অধিকতর গুণগত মানসম্পন্ন ফিনিশড লেদার উৎপাদন করা সম্ভব। এছাড়া, উদ্ভাবিত এই এনজাইম ব্যবহার করে আনট্যানড কঠিন বর্জ্য থেকে কম খরচে পরিবেশবান্ধব উপায়ে বায়োডিজেল এবং জৈব সার প্রস্তুত করা যায়; যা দেশের নবায়নযোগ্য শক্তির অন্যতম উৎস হতে পারে। উপাচার্য এই উদ্ভাবনের বাণিজ্যিকীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতাগুলো দূর করতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এই উদ্ভাবন ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। গবেষণায় অর্থায়ন করার জন্য উপাচার্য শিল্প মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত পদ্ধতিটি ইতোমধ্যে প্রগতি ট্যানারিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কেলেও সফলভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। উদ্ভাবিত প্রযুক্তিটি বর্তমানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন এবং ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে পেটেন্ট অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা গেলে পরিবেশবান্ধব উপায়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ, ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার হ্রাস এবং সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। ফলে বাংলাদেশের ট্যানারিগুলো আন্তর্জাতিক পরিবেশগত কমপ্লায়েন্স সনদ লাভে সক্ষম হবে এবং দেশের চামড়া শিল্প খাত থেকে রপ্তানি আয় বাড়বে।