২০২১-২২ অর্থবছরে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) বাস্তবায়নে সেরা ১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা বিভাগ এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ।
গতকাল ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর এবং এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান-২০২৩’ এর মাধ্যমে এই সম্মাননা দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে এপিএ স্বাক্ষর এবং এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান এবং মূল্যবান দিকনির্দেশনা দেন। সরকারি কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি এবং গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি’ বা এপিএ প্রবর্তন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্ব পাওয়া মন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে সিনিয়র সচিব ও সচিবের মধ্যে প্রতি বছর এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে থাকে।
এই চুক্তিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কৌশলগত উদ্দেশ্য, গৃহীত কার্যক্রম ও লক্ষ্যমাত্রা এবং এসব কার্যক্রমের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পরিমাপের জন্য কর্মসম্পাদন সূচক বিধৃত রয়েছে। মন্ত্রণালয় বা বিভাগের বার্ষিক ও মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এপিএ’র আওতায় বিভিন্ন কার্যক্রমের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে সব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এপিএ স্বাক্ষর করছে। পরবর্তীতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সঙ্গে অধীনস্ত দপ্তর ও সংস্থাগুলোও এপিএ স্বাক্ষর শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিভাগীয়, আঞ্চলিক এবং জেলা পর্যায়ের অফিসগুলোকে এপিএ’র আওতায় আনা হয়। সব শেষে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে উপজেলা পর্যায়ের অফিসগুলো এপিএ সম্প্রসারিত হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সারা দেশে প্রায় ২৬ হাজার সরকারি অফিস এপিএ স্বাক্ষর করেছে। বর্তমানে এপিএ প্রণয়ন, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের কাজটি এপিএএমএস নামক একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার ইউনিট এপিএ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগসহ সকল পর্যায়ের সরকারি অফিসকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে এপিএ প্রণয়নে রূপকল্প-২০৪১, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-২০৩০, ডেল্টা প্ল্যান-২১০০, মন্ত্রিসভা বৈঠকের সিদ্ধান্ত, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি এবং এডিপি বাস্তবায়নকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর নিজস্ব পরিকল্পনা এবং এলোকেশন অব বিজনেস অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম এপিএ- তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া এ বছরের এপিএতে সব সরকারি অফিসের শূন্যপদ পূরণের লক্ষ্যমাত্রা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রতি বছর প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর এপিএ স্বাক্ষর এবং এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়ে থাকে। এ বছর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে এপিএ স্বাক্ষর এবং এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার এবং দিক-নির্দেশনা দেন। প্রতি বছর মন্ত্রণালয় ও বিভাগের এপিএ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে শুদ্ধাচার পুরস্কারও দেওয়া হয়ে থাকে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সিনিয়র সচিব ও সচিবদের মধ্য থেকে ব্যক্তিপর্যায়ে শুদ্ধাচার চর্চার স্বীকৃতিস্বরূপ পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিত কর্মকারকে ‘শুদ্ধাচার পুরস্কার, ২০২২-২৩’ দেওয়া হয়।
এপিএ স্বাক্ষর এবং এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার সদসরা, উপদেষ্টারা, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সিনিয়র সচিব ও সচিব, এপিএ স্বাক্ষরকারী মন্ত্রণালয় ও বিভাগ, এপিএ টিম লিডার ও ফোকাল পয়েন্টরা এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।