ফটিকছড়িতে বেড়েছে সাপের উপদ্রব

প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  চট্টগ্রাম ব্যুরো

চলতি বর্ষার মৌসুমে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার পাহাড়ি এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় সাপের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে সাপের কামড়ে আহত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে নাজিরহাটস্থ ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিষাক্ত সাপের কামড়ের রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মিলছে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত ২২ জুন থেকে ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটা রোগীদের সেবাদান শুরু হয়। গত এক মাসে ১৬ জন রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চারজন সাপে কাটা রোগী ভর্তি রয়েছেন। এদেরই একজন মো. ইউসুফ (৫২)। গত মঙ্গলবার সকালে কৃষিজমিতে কাজ করতে গেলে তাকে সাপে কামড়ায়। পরে তাকে ভর্তি করানো হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বর্তমানে সে অনেকটা সুস্থ। এর আগের দিন গত সোমবার রাতে হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়েছে ৩০ ও ১০ বছর বয়সি দুই রোগীকে। এছাড়াও মহিলা ওয়ার্ডেও ভর্তি রয়েছে ৫০ বছর বয়সি এক নারী রোগী। তারা সবাই সুস্থ রয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে দুইজন। চিকিৎসকরা বলছেন, বিষাক্ত সাপের কামড়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৃত্যুর মূল কারণ সচেতনতার অভাব। ওঝা বা কবিরাজ ও বেদের মাধ্যমে অবৈজ্ঞানিক উপায়ে চিকিৎসা করা, রোগীকে হাসপাতালে আনতে দেরি করা এবং বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে চিকিৎসা না করানোর ফলে অনেক প্রাণ অকালে ঝরে যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরেফিন আজিম বলেন, এমপি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী ও ডাইরেক্টর ও সিভিল সার্জনের নির্দেশনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটা রোগীর সেবা দেয়া হচ্ছে। গত ২২ জুন থেকে আমরা সাপে কাটা রোগী ভর্তি করছি। এর মধ্যে ১৬ জন রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। বিষাক্ত সাপ কামড়ালে তার জন্য এন্টিভেনম প্রয়োগ ও এটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রোধ করার জন্য যেসব জিনিস প্রয়োজন তা আমাদের মজুত রয়েছে। বিষাক্ত সাপের কামড়ে কেউ আহত হলে তাকে যেন দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সাপের কামড়ের এন্টিভেনম ইঞ্জেকশন রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমানে সাপের কামড়ের অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত এবং আধুনিক চিকিৎসা রয়েছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে মানুষ ওঝা বা বৈদ্যের কাছে নিয়ে কেবলমাত্র সময় নষ্টই হয় না, রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। তাই কোনো ওঝা বা কবিরাজের কাছে নিয়ে না গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে বিনামূল্যে সেবা নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।’

এর আগে, গত ১০ জুলাই হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠকে সাপে কাটা রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে সেবা নিতে আহ্বান জানান ফটিকছড়ির সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী। তিনি ফটিকছড়িবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, আগে সাপে কাটা রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হতো না। আমরা এখন সাপে কাটা রোগী ভর্তি করছি।